জাবি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় তিন ছাত্রলীগ কর্মীর শাস্তি চেয়ে ৬ দফা দাবি জানিয়েছে আধিপত্য, বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষক সমাজ।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে, শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী ও শারীরিক নির্যাতনকারী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে বহিষ্কার, যৌন নিপীড়ন সেলে নিয়ে তদন্তের মাধ্যমে যৌন নিপীড়নকারীদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি, শিক্ষক লাঞ্ছনা ও শারীরিক নির্যাতনের বিচার সাত দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে মধ্যে যৌন নিপীড়নের ঘটনার বিচার শেষ করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
এ ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিচারকাজ শেষ না হলে কিংবা নিপীড়কদের পৃষ্টপোষকতার চেষ্টা করা হলে কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে তা প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
নবাগত শিক্ষার্থীদের প্রতিবছর র্যাগিংয়ের মাধ্যমে যে নিপীড়ন করা হয়ে থাকে তা রোধ করার তৎপরতার অংশ হিসেবে উপাচার্যের প্রবেশিকা বক্তৃতার পাশাপাশি হাইকোর্ট প্রণীত যৌন নির্যাতনকারী নীতিমালা ও র্যাগবিরোধী নীতিমালার একটি করে কপি শিক্ষার্থীদের দিতে হবে বলেও দাবি তোলেন শিক্ষকরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘নিপীড়নকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ স্পষ্ট হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ছাত্রলীগের পক্ষ নিয়েছে। একজন শিক্ষকের সাক্ষ্যকে অবজ্ঞা করে তিনি নিপীড়িত নারী শিক্ষার্থীকে জনসম্মুক্ষে আনার চেষ্টা করেছেন। তিনি একজন ভিকটিম নারীকে সাক্ষ্যের নামে সামাজিক হেনস্তা করে পুরানো কায়দায় ঘটনাকে কবর দেয়ার চেষ্টা করেছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে আধিপত্য, বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক স্বাধীন সেন, সদস্য সচিব অধ্যাপক এ এস এম আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, অধ্যাপক এ টি এম আতিকুর রহমান, অধ্যাপক মো. শরিফ উদ্দিন, অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য,গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌরঙ্গীর মোড়ে এক মেয়েকে উত্যক্ত করে ছাত্রলীগের তিন কর্মী। এই উত্যক্তের প্রতিবাদ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মোজাহিদুল ইসলাম। তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ছাত্রলীগের তিন কর্মী।
অভিযুক্ত ওই তিন ছাত্রলীগ কর্মী হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪০তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আবু সাদাত মো. সায়েম, ৪৩তম আবর্তনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের জামশেদ আলম ও বাংলা বিভাগের জাহিদ হাসান।