ঢাকা: জোর গুঞ্জন উঠলেও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে কো-চেয়ারম্যান করা হচ্ছে না। বর্তমান পদেই বহাল থাকছেন তিনি।
বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা ও সম্প্রতি লন্ডনে গিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে মিলিত হওয়া অন্তত দুইজন নেতার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি ) বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে, দলটির আসন্ন জাতীয় কাউন্সিলে তারেক রহমানকে কো-চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খালেদা জিয়া।
কিন্তু ওই বৈঠকে অংশ নেওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির ৩ জন সদস্য’র সঙ্গে সম্প্রতি কথা বলে জানা যায়, তারেক রহমানকে কো-চেয়ারম্যান করার ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি সেখানে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দলের কো-চেয়ারম্যান করার ব্যাপারে ওই দিনের বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি। এ ব্যাপারে অন্য কোনো ফোরামে আলোচনা হয়েছে কি না, সেটিও আমার জানা নেই।
সূত্রমতে, গঠনতন্ত্র আরেক দফা কাটা-ছেঁড়া করে তারেক রহমানকে কো-চেয়ারম্যান করার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ে এ নিয়ে বেশ আলোচনা হয়।
ওই সব আলোচনায় অংশ নেওয়া বেশিরভাগ নেতার পর্যবেক্ষণ হল-খালেদা জিয়া যতদিন বিএনপির নেতৃত্বে আছেন, ততদিন কো-চেয়ারম্যান পদ তৈরি করে নেতৃত্বকে খণ্ডিত করার পক্ষে তিনি নন। এ ব্যাপারে তারেক রহমানেরও তেমন আগ্রহ নেই।
তা ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে ফিরে দলের দায়িত্ব গ্রহণের সুযোগ তারেক রহমানের খুবই কম। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তার ওপর বিএনপির পূর্ণ দায়িত্ব অর্পণ করলে ঝামেলা আরো বাড়তে পারে বলেও মনে করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
তাদের মধ্যে আবার কেউ কেউ বলছেন, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ’র ‘কো-চেয়ারম্যান’, ‘কো-চেয়ারম্যান’ খেলার মধ্যে বিএনপির আসন্ন জাতীয় কাউন্সিল সামনে রেখে তারেক রহমানকে নিয়ে আরেকটি ‘কো-চেয়ারম্যান’ গুঞ্জন চারদিকে ছড়িয়েছে। আদতে এর কোনো ভিত্তি নেই।
সূত্রমতে, বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বেশিরভাগ নেতাই মনে করেন, দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে তারেক রহমান যে অবস্থানে আছেন, এর পর তার জন্য কো-চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি করার কোনো প্রয়োজন নেই। এ পদে থেকেই তিনি কো-চেয়ারম্যানের পদ এনজয় করছেন।
খালেদা জিয়ার অবর্তমানে অনিবার্যভাবেই তারেক রহমানকে বিএনপির প্রধান করা হবে। তার আগ পর্যন্ত তাকে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেই দলে দেখতে চান খালেদা জিয়া।
এ প্রসঙ্গে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) বলেন, কো- চেয়ারম্যানের যে ক্ষমতা ও দায়িত্ব সেটি সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেই এনজয় করছেন তারেক রহমান। সুতরাং গঠনতন্ত্র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদটি বলবত থাকা অবস্থায় তারেক রহমানের জন্য কো-চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সম্প্রতি লন্ডন গিয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে আড়াই ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনায় বিএনপির গঠনতন্ত্রে কো-চেয়ারম্যান পদ সংযোজনের বিষয়টি আসেনি। কোনো আভাসও পাওয়া যায়নি। তবে এ ধরনের দায়িত্ব তাকে দিলে, তিনি তা পালন করতে সক্ষম।
কিন্তু সরকারের যে অবস্থান, তাতে তারেক রহমান চাইলেও কি দেশে ফিরে বিএনপির দায়িত্ব নিতে পারবেন-? সমস্যাটা তো এখানেই- বলেন শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন।