ঢাকা: দাবি আদায় না হলে ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘টোটাল শাটডাউন’ এর ঘোষণা দিয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। শুক্রবার জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি মিলনায়তনে (নায়েম) সংগঠনটির এক সাধারণ সভায় এ ঘোষণা দেন বিসিএস শিক্ষা সমিতির সভাপতি প্রফেসর নাসরীন বেগম।
দাবি পূরণের জন্য ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারকে আলটিমেটাম দিয়ে প্রফেসর নাসরিন বলেন, ‘এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে ২৬-২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ সর্বাত্মক অবস্থান ঘর্মঘট পালন করা হবে। মাঝখানে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আলোচনা বা সমঝোতার সুযোগ রাখছি। ফলপ্রসূ অগ্রগতি না হলে ৬-১০ তারিখ পর্যন্ত ক্লাস বর্জন। এতেও দাবি আদায় না হলে ১১-১৮ তারিখ পর্যন্ত আবারো ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি পালন করা হবে। এসব কর্মসূচিতে আন্দোলন বাস্তায়িত না হলে ২৩ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনসহ অনির্দিষ্টকালের পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে।’
এসময় প্রফেসর নাসরীন আন্দোলন বাস্তবায়নে সংগঠনটির প্রত্যেক সদস্যকে কর্মসূচি পালনের জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করার মানে এই না যে আপনারা বাড়িতে বসে থাকবেন, ঘুরতে যাবেন। এটা আমাদের প্রত্যেকের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। এ সংগ্রামে সবার অংশগ্রহণ অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ।’
অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে অধ্যাপকদের পদ ও বেতন স্কেল অবনমনের প্রতিবাদে এবং পদ আপগ্রেড, সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল পুনর্বহাল ও কৃত্য পেশাভিত্তিক প্রশাসনের দাবিতে এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি।
সাধারণত সরকারি কলেজের অধ্যাপকেরা চতুর্থ গ্রেডের কর্মকর্তা। সিলেকশন গ্রেড থাকায় এত দিন অধ্যাপকদের ৫০ শতাংশ গ্রেড-৩ এ যেতে পারতেন। কিন্তু সিলেকশন গ্রেড বাদ দেয়ায় এখন এই পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে পদমর্যাদার পাশাপাশি মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে শিক্ষকদের দাবি।
শিক্ষকদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ব্যাচ ভিত্তিক প্রমোশন, নিজস্ব ক্যাডার বহির্ভূত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রেষণ বাতিল, নায়েমের ডিজি, পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান ও জেলা সদরের অনার্স বা মাস্টার্স রয়েছে এমন কলেজের অধ্যক্ষের পদ গ্রেড-১ এ উন্নীতকরণ এবং অন্যান্য ক্যাডারের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ।
সব সরকারি কলেজ, সরকারি আলিয়া মাদরাসা , সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, সরকারি কমার্শিয়াল কলেজ ও সরকারি শিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মরত ১৫ হাজার ২৮৯ জন বিসিএস শিক্ষক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মবিরতি পালন করবেন।
এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর সংগঠনটি রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি আদায়ের আল্টিমেটাম দেয় । এরপর ৪ ও ৫ জানুয়ারি কর্মবরতি পালন করেন তারা। ১১-১৭ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতির পর আজ সাধারণ সভায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংগঠনটির সভাপতি প্রফেসর নাসরিন বেগমের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন : সহ-সভাপতি এবিএম ফজলে রাব্বি, মহাসচিব আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকারসহ সমিতির সদস্যরা।