সিঙ্গাপুর ফেরত ১৪ জনের জঙ্গি সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে

Slider জাতীয়

2016_01_21_16_44_11_hSnQ4NeyOJFRlaczasnf87Fbhdyu6v_original

 

 

 

 

ঢাকা: সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত পাঠানো ২৭ বাংলাদেশির মধ্যে ১৪ জনের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে সিঙ্গাপুরের মোস্তফা মার্কেটের পাশে এ্যাঙ্গুলিয়া নামক একটা মসজিদে নিয়মিত একত্রিত হতো। প্রতি রোববার তারা সেখানে সমবেত হয়ে  জিহাদী বয়ান, ওয়াজ ও জিহাদী ভিডিও দেখতো। সেখানেই তারা সদস্য ও অর্থ সংগ্রহ এবং জিহাদী বই প্রকাশনাসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।’

ফেরত জঙ্গিরা হলেন, মো. জাফর ইকবাল, গোলাম জিলানী, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. নুরুল আমিন, মাহমুদুল হাসান, মো. আমিনুর, আব্দুল আলিম, মো. শাহ আলম, আকরাম হোসেন, আলম মাহাবুব, আব্দুল আলী, পারভেজ ডলার, মো. জসীম, মো. আশরাফুল। বাকি ১৩ জনকে অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তাদের গোয়েন্দা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

আটকদের বরাত দিয়ে মনিরুল ইসলাম জানান, সিঙ্গাপুর পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে তাদের আটক করে। তাদের বাসা তল্লাশি করে মোবাইল ফোন জব্দ করে। তাদের মোবাইলে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসীম উদ্দিন রাহমানী, ড. জাকির নায়েক, আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসূফ, শায়েখ মতিউর রহমান মাদানী, আমান উল্লাহ বিন ইসমাইল এবং দেলওয়ার হোসাইন সাইদীর ওয়াজ পাওয়া গেছে।
তারা জানিয়েছে, আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা আছে। বাংলাদেশ থেকেও আনসারুল্লাহর নেতারা সিঙ্গাপুরে যেতেন তাদের জিহাদী কাজে উদ্বুদ্ধ করার জন্য।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সিঙ্গাপুর পুলিশ তাদের আটক করে ২০/২৫ দিন রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।  এরপর তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা যেন সিঙ্গাপুরে আর প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য তাদের ‘রেডলিস্টভুক্ত করে রেখেছে সেদেশের সরকার।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, জঙ্গিরা ২ থেকে ৮ বছর ধরে সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিল। তারা ‘লা-মাযহাব’, অর্থাৎ কোনো মাজহাব অনুসরণ করে না। তারা জসীম উদ্দিন রাহমানী, আবুল কালাম, ড, জাকির নায়েক প্রমুখ ব্যক্তিদের বক্তৃতা শুনে আহলে হাদিসের অনুসারী হন।

তারা জানিয়েছে, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের সহযোগিতার কথা বলে এবং মসজিদ মাদ্রাসার নামে তারা নিয়মিত চাঁদা ওঠাতো। এই টাকা তারা বাংলাদেশে জিহাদী বই প্রকাশের জন্য পাঠাতো। এদের মধ্যে বৈঠকে নিয়মিত বয়ান করতো আমিনুর, নুরুল হক ও আশরাফ। বয়ানে তারা জিহাদ, আল্লাহর রাস্তায় আত্মোৎসর্গ করা এবং ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে উদ্বুব্ধ করতো সদস্যদের।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এরা সকলেই জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। তারা জঙ্গি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার উদ্দেশ্যে আরো সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করছিল। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম সংঘটিত করার পরিকল্পনা ছিল তাদের।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *