ঢাকা: সৌরজগতে আরও একটি গ্রহের সন্ধান মিলেছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। আঁধারে থাকা ও বরফে আচ্ছাদিত এই দানবীয় গ্রহটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্লানেট নাইন’ বা নবম গ্রহ। ২০০৬ সালে গ্রহত্ব হারানো প্লুটোর কক্ষপথ থেকে নতুন এ গ্রহের অবস্থান বেশ পেছনে।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) এক ঘোষণায় ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির একদল মহাকাশ বিজ্ঞানী নতুন এ গ্রহের সন্ধান পাওয়ার দাবি করেন। অ্যাস্ট্রনমিক্যাল জার্নালে গবেষকদের একটি গবেষণা প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। এতে দাবি করা হয়েছে, নতুন আবিষ্কৃত গ্রহটি পৃথিবী থেকে ৫ থেকে ১০ গুণ বড়। তবে প্রতিবেদনের লেখক মহাকাশ বিজ্ঞানী মাইকেল ব্রাউন ও কন্সটানটিন ব্যাটিগিন বলেছেন, তারা সরাসরি এখনও গ্রহটি দেখেননি।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, সৌর জগতে সাম্প্রতিক আবিষ্কৃত বামন গ্রহগুলো ও অন্যান্য ছোট মহাকাশীয় বস্তুর গতিবিধি বিশ্লেষণ করে আঁধারে সাঁতড়ে বেড়ানো নতুন এই গ্রহটির অস্তিত্ব শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। ওই ছোট বস্তুগুলোর কক্ষপথে পরিভ্রমণ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায়, তারা অদৃশ্য বৃহৎ কিছুর আকর্ষণ শক্তি দিয়ে প্রভাবিত। খুব সম্ভবত বৃহস্পতি অথবা শনির শক্তিশালী মহাকর্ষীয় বলের প্রভাবে এই গ্রহটি বহু বছর আগে দূরে প্রক্ষিপ্ত হয়েছিল।
অন্তত দু’টি মহাদেশ থেকে টেলিস্কোপের মাধ্যমে অদৃশ্য এই গ্রহের সন্ধান করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, পৃথিবী থেকে অষ্টম গ্রহ নেপচুনের দূরত্বের চেয়ে ২০ গুণ বেশি দূরত্বে অবস্থান করছে ‘প্লানেট নাইন’।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি প্লানেট নাইন’র অস্তিত্ব সত্যিই থেকে থাকে, তাহলে এটা খুবই বড়। পৃথিবীর চেয়ে এর ব্যাস দ্বিগুণ থেকে চারগুণ বেশি হতে পারে। আর সৌরজগতে পঞ্চম বৃহত্তম গ্রহের মর্যাদা পাবে এটি। আকার-আকৃতিতে এর থেকে এগিয়ে থাকবে বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন।
বিজ্ঞানীরা আরও বলছেন, সুর্য থেকে দূরত্ব খুব বেশি হওয়ার কারণেই হয়তো গ্রহটিতে আলো পৌঁছায় খুবই কম। ফলে একে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে। এমনকি খুব শক্তিশালী টেলিস্কোপেও এটি ধরা পড়বে কি না, সন্দেহ আছে।
যদি ‘প্লানেট নাইন’র অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়, তাহলে সৌরজগতের মডেল আবারও নতুন করে সাজাতে হবে বিজ্ঞানীদের। এর আগে ২০০৬ সালে একবার তাদেরকে এ কাজ করতে হয় গ্রহের তালিকা থেকে প্লুটোকে বাদ দেওয়ার সময়। সে বছর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রনমিক্যাল ইউনিয়ন নতুন করে গ্রহের সংজ্ঞা নির্ধারণ করায় তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায় সৌরজগতের সাবেক এই নবম গ্রহ। ১৯৩০ সালে আকিষ্কারের পর ৭৫ বছর এটি গ্রহের মর্যাদা ধরে রাখে।