ঢাকা: বুদ্ধিমান মানুষজন সকলের কাছেই বেশ পছন্দের হয়ে থাকেন। এর কারণ কি? অবশ্যই তার বুদ্ধিমত্তা, মানসিক চিন্তাভাবনা এবং ব্যক্তিত্ব যা তাদেরকে অন্য সবার থেকে আলাদা করে। কিন্তু একেকজনের বুদ্ধিমত্তা কি আলাদা? কিছু কিছু বিষয় আছে যা মানুষভেদে কমবেশি হতে পারে। কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা যা করি, বলি, খাই, যে পরিবেশে থাকি, যেভাবে বেড়ে উঠি সেইসকল জিনিসই আমাদের বুদ্ধিমত্তা নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।
ভালো সঙ্গ, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং আমাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনাই আমাদের বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। তাই আমাদের বুদ্ধি এবং ব্যক্তিত্ব কি ধরণের হবে তা অনেকাংশে আমরা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করে থাকি। তাই আজকে আপনাদের জন্য রইল এমন কিছু খাবারের তালিকা যা আমাদের বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে বেশ কার্যকরী।
ডিম
ডিমের প্রোটিন আমাদের দেহের প্রোটিনের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করে তা আমরা অনেকেই জানি। ডিমের কুসুমে অনেক ফ্যাট রয়েছে বলে এই খাবারটি থেকেও অনেকে দূরে থাকেন। কিন্তু দিনে একটি ডিম স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মস্তিস্কের জন্যও বেশ উপকারী। ডিমে রয়েছে আমাদের মস্তিস্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর উপাদান ক্লোরিন। এই উপাদানটি আমাদের মস্তিস্ককে সচল রাখতে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে অনেক বেশি কার্যকর।
মাছ
মাছ আমাদের মস্তিষ্ক সচল রাখতে বিশেষভাবে পারদর্শী একটি খাবার। মাছের ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড আমাদের মস্তিস্কের নিউরনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিষেশভাবে ভূমিকা রাখে। যারা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় সামান্য মাছ রাখেন তারা অন্যান্যদের তুলনায় একটু বেশীই বুদ্ধিমান হন।
চকলেট
চকলেট পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুব কমই খুঁজে পাওয়া যাবে। অনেকে আবার মুতিয়ে জাওর ভয়ে চকলেটের মায়া ত্যাগ করে ফেলেন। এবং অভিভাবকগন বাচ্চাদের দাঁতের কথা চিন্তা করে তাদের চকলেট থেকে দূরে রাখেন। কিন্তু আপনি জানেন কি আমাদের মস্তিষ্কের জন্য বেশ ভালো একটি খাদ্য? চকলেট খেলে আমাদের পুরো দেহে ও মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এবং এতে আমাদের মস্তিষ্ক সচল থাকে।তাই চকলেটকে না নয়। তবে চকলেট নির্বাচনের ক্ষেত্রে ডার্ক চকলেট নির্বাচন করাই ভালো।
বাদাম
বাদামে ফ্যাট রয়েছে বলে অনেকই বাদাম থেকে দূরে থাকেন। মুটিয়ে যাওয়ার ভয়ে বাদাম খান না। কিন্তু আপনি জানেন কি বাদামে যে পরিমাণে ফ্যাট রয়েছে তা আমাদের প্রতিদিনের ফ্যাটের চাহিদার তুলনায় বেশ কম। এবং বাদামের ফ্যাট আমাদের চিন্তা করার ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। তাই সকালের নাস্তার পর কিংবা বিকেলের নাস্তায় অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার না রেখে বাদাম রাখুন।
সবুজ শাকসবজি
সবুজ শাকসবজি বাচ্চাদের বেশি খাওয়ানো যায় না ঠিকই কিন্তু এই সবুজ শাকসবজি ছোটবেলা থেকেই তাদের মস্তিস্কের গঠনকে করে তোলে মজবুত। ব্রকলি, পালং শাক, বাঁধাকপি, পাতাকপি ইত্যাদি সবুজ শাকসবজি সবই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এইসকল উদ্ভিজ্জ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে ফলে মস্তিষ্ক থাকে সচল। তাই ছোট বড় সকলের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমানে সবুজ শাকসবজি রাখা অত্যন্ত জরুরী।
চা ও কফি
চাও কফি খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে চা বা কফি পান করলে অনেকের দিন শুরু হয় না। চা ও কফি একটি রিফ্রেশিং পানীয়ের পাশাপাশি আমাদের অস্তিস্কের জন্যও বেশ ভালো। চা বিশেষ করে গ্রিন টির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের নতুন নিউরন তৈরিতে সাহায্য করে। এবং কফির ক্যাফেইন আমাদের মস্তিস্ককে সতেজ রাখতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। চা ও কফি নিয়মিত পান করলে মস্তিস্কের নানা রোগ এবং স্মৃতিশক্তি নষ্টের মতো অনেক রোগ থেকে আমরা রেহাই পেতে পারি। তবে দিনে ২/৩ কাপের বেশি চা/ কফি পান করা উচিৎ নয়।