ছোটদের ঘর সাজানোর সময় অনেকগুলো বিষয়ে খেয়াল রাখতে হয়। শিশুর পছন্দ হওয়ার পাশাপাশি ঘরের নকশা এবং আসবাবের উপর নির্ভর করে ঘরটা কতটা খোলামেলা।
এখনকার স্থাপত্য নকশায় খুব বেশি বড় ঘর বাচ্চাদের জন্য রাখা একটু কঠিনই বটে। এছাড়াও তাদের এত এত খেলনা, বই, কাপড় রাখার জায়গা তৈরি করে খুব বেশি খোলা জায়গা রাখা বেশ দায়।
শিশুর ঘরের খোলা জায়গার তাই একটি ভালো সমাধান হতে পারে বাঙ্কা বেড বা দোতলা খাট।
আমাদের দেশে দোতলা খাটের প্রচলন খুব বেশি নয়। তবে অনেকেই হুমায়ূন আহমেদের ‘আজ রবিবার’ নাটকে তিতলি ও কংকার মজার দোতলা খাটটা দেখেছি। সেটিই হচ্ছে বাঙ্ক বেড বা দোতলা খাট।
একটা বাসায় যদি একাধিক শিশু থাকে তবে তাদের শোয়ার ব্যবস্থা পাশাপাশি না করে উপরে নিচে করে দিলে একটা খাট এবং তার পাশে রাখার জায়গাটুকু বেঁচে যায়।
“এই ধরনের খাট যে শুধু জায়গা বাঁচায় তাই নয়, শিশুরা তাদের খাটটি খুবই ভালোবাসে”, বললেন দোতলা খাট ব্যবহার করেন এমন একজন মা বনানীর নৌশিন তাহসিনা হাসান।
তার দুই ছেলে মেয়ে নাশওয়াহ বয়স চার বছর এবং ছেলে নাফি বয়স দুই বছর।
তিনি বলেন, “নাশওয়াহ ও নাফির খাটটা দোতলা হলেও এতে মোটামুটি চারজন বড় বাচ্চা এঁটে যাবে। উপরের ঘাটে একজন, নিচের খাটোটা সেমি ডাবল তাই সেখানে দুইজন।”
বাকি একজন কই যাবে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি খাটের নিচে থেকে আরও একটা বিছানা টেনে বের করে দেখান। এটা একটা হাইড-আ-বেড। যা ড্রয়ারের মতো নিচের খাটেরও নিচে ঢুকিয়ে রাখা যায়।
ওরা যখন একটু বড় হয়ে যাবে বাসায় বন্ধুরা বা কাজিনরা থাকতে আসবে তখন নিচের বেডটা কাজে লেগে যাবে অনায়াসেই।
নাশওয়াহ-নাফির খাটের সিঁড়িটাও বেশ মজার। সিঁড়ির প্রতিটা ধাপের নিচে আছে একটা করে ড্রয়ার। এরকম মোট পাঁটি ধাপে রয়েছে পাঁচটি ড্রয়ার। ফলে এখানেও জায়গা বাঁচানোর একটা চমৎকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাঙ্ক বেড অনেক রকমের হতে পারে। এটা জরুরি না যে দোতলা খাট রাখতে চাইলে বাসায় দুটি শিশু থাকতে হবে। বাংকার বেড অনেক রকমের হয়। কিছু বেডের নিচে আরেকটি বিছানার বদলে পড়ার টেবিল বা আলমারি থাকে। কিছু কিছু বেডের নিচে টেল এবং আলমারি দুইই থাকতে পারে। তাই এক শিশুর ঘরেও খুব সহজেই রাখা যায় বাঙ্ক বেড।
দোতলা খাটের বাজার ঘুরে দেখা যায় সাধারণ দুই বেডের বাঙ্ক বেডের দাম শুরু হয়, ৩০ হাজার টাকা থেকে। নিচে আলমারি এবং টেবিল আছে এমন বিছানার দাম শুরু হয় ৪৫ হাজার টাকা থেকে।
নিচে ড্রয়ার বেড এবং পাশে সিঁড়ির আদলে ড্রয়ার আছে এমন দোতলা খাটের দাম শুরু হয় ৪০ হাজার টাকা থেকে। এই ধরনের বিছানার সর্বোচ্চ দাম ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
বিছানাগুলোর দাম নির্ভর করে এগুলোর উপকরণের উপর। বাজার ঘুরে দেখা গেছে এই ধরনের আসবাব মূলত বানানো হয় ম্যালামাইন ফেসড চিপ বোর্ড দিয়ে। এই উপকরণে বানানো বিছানাগুলোর দাম তুলনামূলক কম।
তবে সাধারণ বা কম্পজিড কাঠ দিয়ে তৈরি করা হলে দাম বেড়ে যায়। জানিয়েছেন একজন ফ্রিলান্স ইন্টেরিওর ডিজাইনার আফরিন ভূঁইয়া।
কেউ যদি রেডিমেইড বিছানা না কিনে নিজের মতো করে বানিয়ে নিতে চায় তবে সব কিছু মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৭০ হাজার টাকার মধ্যে বেশ ভালো মানের বাঙ্ক বেড গড়ে দেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি।
রেডিমেইড বাঙ্কার বেড পাওয়া যাবে হাতিলের যে কোনো শো-রুম, হাই ফ্যাশন গ্যালারি গুলশান, কিউব ফার্নিচার, কিডস প্যারাডাইস যমুনা ফিউচার পার্ক, পান্থপথের আসাবপত্রের দোকান এবং গুলশান নতুন বাজারে অবস্থিত প্রায় সব ফার্নিচারের দোকানে।