ঢাকা : দ্রুত লেনদেনের সহজ মাধ্যম হওয়ায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। গত মাসে গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হয়েছে প্রায় ৫শ কোটি টাকা। আর ৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়ে গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ১২ লাখে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নভেম্বর মাসে প্রতিদিনই গড়ে ৪৯৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। যা আগের মাস অক্টোবরে ছিল ৪৩৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সে হিসাবে, লেনদেন বড়েছে ১৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আর গ্রাহক সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ১২ লাখে। যা আগের মাসে ছিল ৩ কোটি ২ লাখে।
তথ্য মতে, গ্রাহকের পাশাপাশি বেড়েছে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিনিধি বা এজেন্ট। অক্টোবরের চেয়ে নভেম্বরে এজেন্টের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৫২ হাজার ৬৫২ জনে। আগের মাসে যা ছিল ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৩। গ্রাহক বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে অ্যাকটিভ (সক্রিয়) অ্যাকাউন্টের সংখ্যা। নভেম্বরে সচল অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার। আগের মাসে ছিল ১ কোটি ২০ লাখ ৫৭ হাজার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত নভেম্বর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ১৪ হাজার ৯১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছ। যা অক্টোবরে ছিল ১৩ হাজার ৪১ কোটি ২২ লাখ লাখ টাকা। অর্থাৎ ১ মাসের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ১৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ। টাকার অংকে যা ১ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরো দেখা যায়, আগের মাসের তুলনায় নভেম্বরে প্রবাসী আয়ের লেনদেন বেড়েছে ২৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এ সময়ে লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা যা অক্টোবরে ছিল সাড়ে ২ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ সেবার মাধ্যমে নভেম্বর মাসে টাকা উত্তোলন (ক্যাশ আউট) করা হয়েছে ৫ হাজার ৪৭৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, যা আগের মাসে ছিল ৪ হাজার ৭০৪ কোটি ৪ লাখ টাকা। নভেম্বর মাসে অন্যের হিসাবে টাকা পাঠিয়েছেন এমন লেনদেনের পরিমাণ ২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, যা আগের মাসে ছিল ২ হাজার ২৯২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বেতন পরিশোধ করা হয়েছে ১৪০ কোটি ৯১ লাখ টাকা, যা আগের মাসে ছিল ৯৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
অক্টোবর মাসে সেবা-বিল পরিশোধ হয়েছিল ১৬৮ কোটি ২১ লাখ টাকা। যা কমে গিয়ে নভেম্বরে দাঁড়িয়েছে ৯৯ কোটি ৪২ লাখ টাকায়। অন্যান্য খাতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৩১২ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা বলেন, গ্রাহকসংখ্যা বাড়ানোর চেয়ে এখন সঠিক গ্রাহক ও লেনদেনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। মানুষ এটা থেকে উপকৃত হচ্ছে বলেই মাধ্যমটি জনপ্রিয় হচ্ছে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেন নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা অনেক কমে যাওয়ায় মানুষের আস্থা বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংক এ পর্যন্ত ২৮ ব্যাংককে অনুমোদন দিলেও এ সেবা দিচ্ছে ২০ ব্যাংক। এর মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান বিকাশের গ্রাহক সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এবং এরপরই আছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং।