বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর মূল পাইলিং ও নদী শাসনের আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হচ্ছে শনিবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মার দুপাড়ে এ দুটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষের কাঙ্ক্ষিত এ সেতুর মূল দুটি কাজের উদ্বোধনকে ঘিরে তাই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর বাকি কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হবে বলে আশাবাদী সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
পদ্মার মাওয়া পাড় থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরত্বে নদীর মধ্যে অবস্থিত ৭ নম্বর ব্লক। যেটিকে পুরোপুরি প্রস্তুত করে তোলা হয়েছে মূল পাইলিংয়ের জন্য। ইতিমধ্যে নদীতে নিয়ে আসা হয়েছে ১৩৫ মিটার দৈর্ঘ্যের পাইল। নদীর পাড়ে জড়ো করা হয়েছে অন্য পাইলগুলোও।
৭ নম্বর সংখ্যাটিকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। আর পদ্মা সেতু যেহেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষের জন্য সৌভাগ্যের প্রতীক হয়ে আসছে। তাই হয়তো এই ৭ নম্বর ব্লককে নির্ধারণ করা হয়েছে আনুষ্ঠানিক মূল পাইলিংয়ের জন্য। আর এ রকম ৬টি পাইলের ওপর নির্মাণ করা হবে এক একটি পিলার। যেটি করতে সময় দরকার হবে ১ মাসেরও বেশি। পর্যায়ক্রমে এ রকম আরো ৪১টি পিলারের ওপর নির্মাণ করা হবে ৬.১৫ কিলোমিটারের পদ্মা সেতু।
এর আগে মার্চ মাসে টেস্ট আর আগস্ট মাসে ট্রায়াল পাইল থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হয়েছে মূল পাইলের নকশা। এক একটি পাইলকে নদীর তলদেশে পাঠানো হবে অত্যাধুনিক সব হ্যামার আর ক্রেন দিয়ে। এ জন্য ব্যবহার করা হবে চারটি আধুনিক ফ্লোটিং ক্রেন। এছাড়াও প্রায় ১০০টি ছোট-বড় ক্রেন এবং বিশ্বের সবচে শক্তিশালী ২টি হাইড্রোলিক হ্যামারও প্রস্তুত। পদ্মার দুপাড়ের মানুষের মতোই অপেক্ষার পালা শেষ সংশ্লিষ্টদেরও।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মাসেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জটি অতিক্রম করলেন। ১২ ডিসেম্বর সেই শুভদিন। যেই শুভদিনের প্রতীক্ষায় সারা বাংলাদেশ প্রহর গুণছে এবং পদ্মার দুই তীরে আজকে খুশির স্রোত বইছে।
প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলেছে পদ্মা সেতুর ওয়ার্কশপও। চীন থেকে আনা স্টিলের প্লেটগুলো দিয়ে পাইলের খণ্ডাংশ বানিয়ে জোড়া দেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনমত পাইল বানিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নদীতে বসানোর জন্য। যে সেতু নিয়ে দেশে বিদেশে এত আলোচনা যথাসময়ে তার কাজ শেষ হওয়া নিয়ে কোনো সংশয় নেই, বলেও জানান তিনি।