মুন্সিগঞ্জ: মুন্সিগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস ১১ ডিসেম্বর। দিবসটি উপলক্ষে জেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বর্ণাঢ্য ৠালি ও আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
পাশাপাশি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন মুন্সিগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।
একাত্তর সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদারদের আক্রমণের খবর পেয়ে ২৭ মার্চ জামালউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে ছাত্র শ্রমিক-কৃষক-জনতা সিরাজদিখান থানার পুলিশ ক্যাম্পের অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়। এর একদিন পরে ২৯ মার্চ মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজের শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার সামনে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করা হয়। একই দিন জেলার অস্ত্রাগার থেকে হাতিয়ারও ছিনিয়ে নেয় তারা।
ওই মাসের শেষ দিন (৩১ মার্চ) পাকিস্তানি হায়েনারা নারায়ণগঞ্জ আক্রমণ করলে মুন্সিগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধারা নারায়ণগঞ্জের মানুষের সঙ্গে একত্রিত হয়ে চার ঘণ্টা যুদ্ধ করে। ২০ এপ্রিল ফের যুদ্ধ হয় তাদের সঙ্গে। অনেক প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে ৯ মে পাকিস্তানি সৈন্য ঢুকে পড়ে মুন্সিগঞ্জে। তারা গজারিয়ায় ফুলদী নদীর তীরে ৩৬০ জেলে ও কৃষককে হত্যা করে।
মুন্সিগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম অপারেশন শুরু হয় আব্দুলপুর বাজার পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে হামলার মধ্য দিয়ে। ১৩ জন মুক্তিযোদ্ধা তাদের উপর আক্রমণ করে। এসময় যুদ্ধে দুই পাকিস্তানি সেনা ও ১১ রাজাকার নিহত হয়।
চূড়ান্ত যুদ্ধ হয় ৪ ডিসেম্বর শহরের পাশে রতনরপুর এলাকায়। এ যুদ্ধে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সহস্রাধিক মুক্তিযোদ্ধা পাকিস্তানিদের তিনটি বড় দলের সঙ্গে যুদ্ধ করে। এতে তিন পাকিস্তানি সেনা ও স্থানীয় ১৪ থেকে ১৫ জন সাধারণ মানুষ মারা যায়।
এর ধারাবাহিকতায় ১০ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে হানাদার বাহিনী মুন্সিগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজ ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং ১১ ডিসেম্বর ভোরে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বিজয় মিছিল করে মুন্সিগঞ্জবাসী।