সাম্প্রতিক সময়ের টানা দরপতনের পর ডিএসইর কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে নতুন করে ব্রোকারেজ শাখা খোলার অনুমতি প্রদানের আবেদনটি সক্রিয়ভাবে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছিলেন বিএসইসির কর্মকর্তারা। গত অক্টোবর ও নভেম্বরের টানা দরপতনে লেনদেন ২০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে আসার প্রেক্ষাপটে এ আশ্বাস দিয়েছিলেন তারা। দেশের প্রধান এ শেয়ারবাজারে এখন সদস্য ব্রোকারেজ হাউসের সংখ্যা ২৫০। তবে এর মধ্যে সক্রিয় ২৩৪টি। প্রধান কার্যালয়সহ ১৬৮টি ব্রোকারেজ হাউসের প্রায় এক হাজার ২০০ শাখা রয়েছে। তবে গত কয়েক বছরের দরপতনে লেনদেন ব্যাপক হারে কমে যাওয়ায় অনেক ব্রোকারেজ হাউসই তাদের শাখার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধের কাথা জানানো হয়নি।
ডিএসইর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, স্টক এক্সচেঞ্জটির ২৩৮ ব্রোকারেজ হাউসের মধ্যে অন্তত ৭০টির প্রধান কার্যালয় ছাড়া কোনো শাখা অফিস নেই। কেবল ওই ব্রোকারেজ হাউসগুলোকেই নতুন শাখা খোলার অনুমতি প্রদানের বিষয়ে সম্মতি দেওয়ার কথা বলেছিল বিএসইসি।
বিএসইসির এক কর্মকর্তা বলেন, শিগগির স্মার্টফোনের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে ব্রোকারেজ শাখা স্থাপন করে নতুন বিনিয়োগকারী সৃষ্টির দরকার নেই। তা ছাড়া শাখা খোলায় ব্রোকারেজ হাউসগুলোর খরচও বাড়বে। এর বিপরীতে কেবল মোবাইল ফোনে শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ দিয়ে হাউসগুলো গ্রাহক বাড়াতে পারবে বলে তারা মন্তব্য করেন।
ডিএসইর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, স্মার্টফোনের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ নিতে হলেও গ্রাহকদের কমপক্ষে একবার বিও হিসাব খোলার জন্য ব্রোকারেজ হাউসে আসতে হবে। এ ছাড়া বেশিরভাগ মানুষেরই ইলেট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার করার সুযোগ নেই বা এ বিষয়ে তারা অভ্যস্ত নন। তারা ব্রোকারেজ হাউসে এসে নগদ অর্থ বা চেক জমা দেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আবার টাকা তোলার ক্ষেত্রেও তারা নগদ অর্থ বা চেক নিয়ে যান। তার মতে, কোনো এলাকায় ব্রোকারেজ শাখা না থাকলে তাদের পক্ষে শেয়ারবাজারে অংশ নেওয়া সত্যিই কঠিন। এ ধরনের এলাকায় ব্রোকারেজ শাখা খোলার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন। শাকিল রিজভি বলেন, এ ছাড়া যেসব বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান নতুন ব্রোকারেজ লাইসেন্স নিয়েছে, তাদেরও ব্যবসার স্বার্থে কিছু শাখা প্রয়োজন।
ডিএসইর ব্রোকারেজ শাখা খোলার প্রস্তাব নাকচ
ব্রোকারেজ হাউসের নতুন শাখা খোলার বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রস্তাব নাকচ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্মার্টফোনের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে নতুন করে ব্রোকারেজ হাউসের কোনো শাখা খোলার প্রয়োজন নেই বলে মনে করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এ কারণে প্রস্তাবটি নাকচ করা হয়েছে। অন্যদিকে ডিএসইর যুক্তি ছিল, এখনও দেশের অনেক এলাকায় ব্রোকারেজ শাখা না থাকার কারণে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারের মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন না। ব্রোকারেজ শাখা খোলা গেলে অনেক মানুষই তাদের সঞ্চয়ের একটা অংশ বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন।