গ্রাম বাংলা ডেস্ক: ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ‘বোঝে না সে মন বোঝে না’ খ্যাত এবারের ঈদের আলোচিত পোশাক ‘পাখি’র কাছে হার মেনেছে ঘিওর উপজেলাসহ মানিকগঞ্জের পোশাক কারিগররা। আর এই পোষাকের জন্য আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। পোষাকের টাকা না থাকায় সংসারে অশান্তিও হচ্ছে।
ভারতীয় অভিনেত্রী মধুমিতা সরকারের নামে নামকরণ রেডিমেট আর বাহারি রঙের থ্রি পিচ পাখি ডিজাইনে সয়লাব সকল বিপনী বিতান। সারাদেশেই এর প্রভাব পড়েছে। পাখির কাছে ধরাশায়ী হয়ে গেছে বাংলাদেশের সকল দজিরা।
এর ফলে এবারের ঈদে মেয়েদের কাপড় কিনে থ্রি পিস বানানোর হার অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে।
প্রতি বছরই ১৫ রোযার পর থেকে সাধারণত মানিকগঞ্জের দর্জিরা অর্ডার নেয়া বন্ধ রাখে। কিন্তু এবারের দৃশ্যপট ভিন্ন। ঘিওরের বানিয়াজুরী বাসস্ট্যান্ডের আশামনি টেইলার্স-এর মালিক মোঃ মহিউদ্দিন জানান, গত ঈদের চেয়ে মেয়েদের পোশাক তৈরির ঝোঁক অনেক কম। বেশির ভাগই নারীই এবার পাখিতে আসক্ত।
শিশু মেয়ে থেকে শুরু করে সব বয়সী নারীদের জন্যই রয়েছে বাহারি রঙের আর বিভিন্ন মাপের পাখি পোশাক।
শুক্রবার বিকেলে মানিকগঞ্জ শহরের এক অভিজাত বস্ত্র বিপনী মার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে কোলের শিশুর জন্যও পাখি, মায়ের জন্যও পাখি। শুধু পাখি আর পাখি।
শহরের চন্দ্রিমা ফ্যাশনের এক বিক্রেতা জানান, ঈদের কেনাকাটা করতে ৮০ ভাগই নারী আসে। আর সবার মুখেই একবার হলেও উচ্চারিত হচ্ছে পাখি ড্রেসের কথা।
ঘিওরের সদর এলাকার পারুল আক্তার ও তার ৮ বছরের মেয়ে দুজনেই কিনেছে পাখি থ্রি পিস।
বালিরটেকের লতা খানম অনেক খুঁজে পছন্দসই পাখি পোশাক কিনতে পেরে যেন আনন্দের আর ধরে রাখতে পারছেন না। জাতীয় পর্যায়ে পুরষ্কারপ্রাপ্ত শিশু নৃত্যশিল্পী অরিন কিনেছে দুই রঙের দুটি পাখি।
বানিয়াজুরী এলাকার জনপ্রিয় টেইলার্স ‘স্বর্ণামণি টেইলার্স এন্ড ফেব্রিক্স’-এর স্বত্বাধিকারী ইসলাম খান জানান, গত ঈদে ১৫ রোযার পর আমরা কোনো অর্ডার নেইনি। এবার বেশির ভাগ মেয়েরাই তৈরি পাখি পোশাক কেনার ফলে অন্য থ্রি পিসের অর্ডার পাচ্ছি অনেক কম। কারিগরদেরও এবার চাপ খুব কম। অনেকটা আক্ষেপের সুরে তিনি জানান, পাখির কাছে ধরা খেয়ে গেলাম।