অবকাঠামোতে আরও বিনিয়োগে আগ্রহী চীন

Slider অর্থ ও বাণিজ্য
untitled-3_176066
বিদ্যুৎসহ অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছেন চীনা উদ্যোক্তারা। বস্ত্র ও তৈরি পোশাক, কৃষি, যন্ত্রপাতি, ইলেকট্রনিক্স ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতেও আগ্রহ রয়েছে তাদের। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় চীনের ঝিজিয়ান প্রদেশ ও বাংলাদেশের যৌথ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্মেলনে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিনিয়োগের নানা সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরা হয়।

এফবিসিসিআই ও চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের (সিসিপিআইটি) যৌথ উদ্যোগে গতকাল বৃহস্পতিবার সোনারগাঁও হোটেলে দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে চীনের ভাইস মিনিস্টার চ্যান হুয়ানহুয়ার নেতৃত্বে ৫৪টি কোম্পানির ১২০ প্রতিনিধি অংশ নেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানির ২৫০ প্রতিনিধি এতে উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল চীনা ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ঋণ নয় বিনিয়োগ করুন। বড় বাজার পাবেন।’ মন্ত্রী বলেন, চীনের প্রযুক্তি ও এ দেশের সস্তা শ্রম কাজে লাগাতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। এখানে বিনিয়োগ করলে জমির মালিক হওয়ার সুযোগ আছে এবং উৎপাদিত পণ্য রফতানিতে কর অবকাশ সুবিধা পাবেন তারা।
চীনের ভাইস মিনিস্টার বলেন, তাদের দেশের উদ্যোক্তারা এ দেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ কাজে লাগাতে চান। চীনের বিভিন্ন খাতের শতাধিক উদ্যোক্তা বস্ত্র, গার্মেন্ট, যন্ত্রপাতি, কৃষি, বিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করতে সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, চীনের উদ্যোক্তাদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের বড় সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া সরকারের ৫০০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে বিনিয়োগে আগ্রহী হলে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে চুক্তি করতে পারেন চীনের উদ্যোক্তারা।
বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. এসএ সামাদ বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক বড় বাণিজ্য রয়েছে। সেখান থেকে ঋণও অনেক নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ দেশে চীনের বিনিয়োগ খুব কম। চীনের অনেক কোম্পানি নিবন্ধন করলেও প্রকৃত বিনিয়োগ তেমন বাড়েনি। তিনি কৃষি, খাদ্য, বস্ত্র, প্রিন্টি অ্যান্ড প্যাকেজিং, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ দেশের বিনিয়োগ করলে উচ্চ মুনাফা ফেরত নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, চীন এ দেশে বিনিয়োগ করতেই যৌথ সম্মেলন করছে। একক ও যৌথ বিনিয়োগের বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। সম্মেলনের পরে ব্যবসায়িক বৈঠকে আলোচনা করে বিনিয়োগের ক্ষেত্র নির্ধারণ করা হবে।
ঢাকায় চীনা দূতাবাসের কর্মাশিয়াল কাউন্সিলর ওয়াং ঝিজিয়ান বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়াতে চায় চীন। বিভিন্ন খাতে এ দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যৌথভাবে বিনিয়োগ করতে চান চীনা উদ্যোক্তারা।
সম্মেলনে এফবিসিসিআইর সহসভাপতি ও পরিচালক শেখ ফজলে ফাহিম, সফররত সিসিপিটিআই ঝিজিয়ানের চেয়ারম্যান উ গুইয়াই বক্তব্য রাখেন।
চীনে রফতানি বাড়াতে চায় বাংলাদেশ :বর্তমানে চীনে বার্ষিক ৫৫৮ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ। আগামী চার বছরে তা ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বুধবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে চীনের ঝিজিয়ান প্রদেশের বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে এ কথা বলেন তিনি।
নৈশভোজে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, এফবিসিসিআইর সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসসহ বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ও দেশীয় ব্যবসায়ী নেতারা।

– See more at: http://bangla.samakal.net/2015/11/27/176066#sthash.yfDN92Nn.dpuf

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *