পরিবর্তন এর কথা শুনলেই আমাদের ক্যামন যেন জর চলে আসে। সামনে না বললেও ভিতরে ভিতরে পচে মরতে হয়। তবে কিছু অভ্যাস থাকে যা আমরা অনেকেই পরিবর্তন করতে চাই, কিন্তু হয়ে ওঠে না। অভ্যাস আসলে কি? অভ্যাস হল আমাদের নিয়মিত করা কিছু কর্মকাণ্ড যা নিয়ে আমরা ভাবি না। এবার এসব অভ্যাস এর পরিবর্তন বলতে শুধু খারাপ অভ্যাসগুলোকে ঝেড়ে ফেলা নয়, বরং শত খারাপের মাঝে কিছু ভালো স্বভাব অভ্যাসে পরিণত করা – যেমন যেখানে সেখানে কিছু না ফেলা, বই পড়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা কিংবা হাঁটতে যাওয়া……এছাড়াও আরও অনেক কিছু যা আপনার জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। তাই দেখে নিন অভ্যাস পরিবর্তনের ১০টি উপায়ঃ
১। লেগে থাকুনঃ
অভ্যাস পরিবর্তনের প্রথম শর্ত হল লেগে থাকা। এর মানে এই না যে আপনাকে ২৪ঘন্টা সেই কাজটাই করতে হবে। এর মানে কষ্ট করে হলেও চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। ধরুন আপনি চাইছেন প্রতিদিন ২ ঘন্টা করে হাঁটবেন। কিন্তু হাঁটতে গিয়ে আপনি হাপিয়ে ওঠেন এবং আধা ঘণ্টা পর বাড়ি চলে আসেন। তাহলে জীবনেও আপনার অভ্যাস পরিবর্তন হবে না। বরং একদিন আপনি আর হাঁটতে যাবেন না। আর সেটাই হবে আপনার অভ্যাস। তাই হাঁটতে গেলে আপনার উচিত হবে ২ঘন্টা হেঁটে তারপর ফেরা। মনে রাখবেন আমাদের মন আমাদের সব সময় বিভ্রান্তিতে ফেলে। হাঁটার সময় আপনার মনে হতে পারে আপনার খারাপ (অসুস্থ থাকলে ভিন্ন কথা) লাগছে কিংবা আজকে না পারলেও কালকে থেকে পারবেন। এটা সম্পূর্ণ ভুল তা আপনি নিজেও জানেন। তাই অভ্যাস পরিবর্তনের খাতিরে লেগে থাকুন। শুধু হাঁটার জন্য নয় অন্য যেকোনো কাজের ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য।২। প্রতিজ্ঞা করুণঃ
একবার না পারিলে দেখো শতবার – কথাটা আমরা সবাই জানি। তবে আমরা যা মানি তা হল – আজিকে না পারিলে দেখো রবিবার। অর্থাৎ আমরা আগামীকালের জন্য আমাদের কাঙ্খিত কাজটি ফেলে রাখি এবং সেই আগামীকাল আর কখনো আসে না। এভাবেই আমাদের অভ্যাসও পরিবর্তন হয় না। তাই আর আগামীকালের কথা না ভেবে যা ভাবছেন তা আজকেই শুরু করার জন্য প্রতিজ্ঞা করুণ।৩। নিজেকে উপরহার দিনঃ
দিন শেষে কিছু পেতে কার না ভালো লাগে? তবে সেই পাওয়া হোক অর্জনের বদলে। নিজেকে উপহার দিয়ে অভ্যাস পরিবর্তনে সাহায্য করুণ।৪। না বলতে শিখুনঃ
আপনি একসাথে সবকিছুর জন্য তৈরি হতে পারবেন না। পারলেও দিনশেষে বলতে হবে, “জ্যাক অফ ট্রেইটস, মাস্টার অফ নান।” অর্থাৎ কোনো কিছুতেই পারদর্শী না। অভ্যাস এর বেলাতেও তাই। সব একসাথে পরিবর্তনের চেষ্টা করবেন না। যেকোনো একটা দিয়ে শুরু করুণ এবং বাকি সবকিছুকে না বলুন। এমনকি যা আপনার অভ্যাস পরিবর্তনে বাঁধা সৃষ্টি করবে সেটাকেও না বলুন।৫। আস্থা রাখুনঃ
শুরুতেই আপনি সাফল্য পাবেন তা ভেবে বসে থাকবেন না। নিজের উপর আস্থা রাখুন। সাফল্য আসবেই অর্থাৎ অভ্যাস পরিবর্তন হবেই। ক্ষেত্র বিশেষে সময় বেশি লাগতে পারে এই যা।৬। শাস্তি দিনঃ
বাচ্চারা ভুল করলে শাস্তি দেয়া হয় যেন তারা আর সেটা না করে। অভ্যাস পরিবর্তনের জন্য আপনারও শাস্তির প্রয়োজন আছে। আপনি সকালে হাঁটতে যেতে চান অথচ আজ সকালে তা পারলেন না। এজন্য নিজেকে শাস্তি দিন যেন পরবর্তীতে এরকম আর না হয়। ভয়াবহ শাস্তি হতে পারে সারাদিন ফেসবুকে না ঢোকা৭। রুটিন তৈরি করুনঃ
অভ্যাস পরিবর্তনের জন্য একটা রুটিন থাকা প্রয়োজন। কেননা রুটিন একটা নিয়ম তৈরি করে। আর নিয়ম ছাড়া কোনো কিছুই সম্পূর্ণ নয়। তাই অভ্যাস পরিবর্তনের শুরুতেই একটা রুটিন করে ফেলুন এবং সেটা মেনে চলার চেষ্টা করুণ।৮। ইচ্ছাশক্তির প্রয়োগঃ
পরিবর্তন অনেক সময় আমাদের ইচ্ছাশক্তির কাছে হেরে যায়। আমরা ইচ্ছা করলেই যেটা পারি সেটাকে দূরে ঠেলে কি লাভ? আপনার ইচ্ছাশক্তিই আপনার অভ্যাস পরিবর্তনের মূল চাবিকাঠি।৯। পরামর্শ নিনঃ
সবকিছু ঠিক আছে মনে হলেও কিছু না কিছু বাকি থেকে যায় এবং আমাদের অভ্যাস এর আর পরিবর্তন ঘটে না। এমন মনে হলে কারো কাছে পরামর্শ নিন।১০। প্রশ্ন করুনঃ
দিনশেষে নিজেকে প্রশ্ন করুণ। কেননা আপনিই আপনার বিচারক। যদি উত্তরে সন্তুষ্ট হন তবে চালিয়ে যান। নতুবা নিজের ভুলগুলো শুধরে নিন এবং অভ্যাস পরিবর্তনে নিজেকে সাহায্য করুণ।কিছু খারাপ অভ্যাস এর কারণে আপনি সবার থেকে দূরে সরে যেতে পারেন। আবার কিছু ভালো অভ্যাস আপনার জীবনকে সুন্দর করে তুলবে। তাই এখনই পরিবর্তনের চেষ্টা করুণ…অভ্যাস।।