পল্টন থানায় নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা তিন মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কেন স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না মর্মে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে তাকে তিন মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ফখরুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন। বিচারপতি মো. রেজা-উল হক ও বিচারপতি খসরুজ্জমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
এ রুলের শুনানিতে আদালতের ফখরুলের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফজলুর রহমান খান।
গত ৯ নভেম্বর রুল শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। তার আগে গত ২ নভেম্বর মির্জা ফখরুলকে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। পরের দিন ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার মির্জা ফখরুল নিম্ন (বিচারিক) আদালতে আত্মসমর্পণ করতে গেলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
গত ২১ জুন মির্জা ফখরুল ইসলামকে কেন স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। রাজধানীর বিভিন্ন থানায় তিন মামলার জামিন আবেদন হাইকোর্টের জারি করা রুল দুই সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করার আদেশ দেন আদালত।
২ নভেম্বর সোমবার আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ২ নভেম্বর আবারও আট সপ্তাহ সময়ের আবেদন জানিয়েছিলেন মির্জা ফখরুল। এ আবেদন খারিজ করার ফলে মঙ্গলবারে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
গত ২১ জুন ওই তিন মামলায় ফখরুলকে জামিন দিয়ে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ। তাকে কেন স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
গত ২৯ জুন ফখরুলের জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। পরে সেটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত। পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ তাকে তিন নভেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে বলেন। সুপ্রিমকোর্টের আদশ অনুযায়ী তিনি নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করতে গেলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।
তার আগে গত ১৩ জুলাই এ তিন মামলায় মির্জা ফখরুলকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন আদেশ বহাল রেখে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
এর আগে গত ২৮ জুন পল্টন থানার দুটি ও মতিঝিল থানার একটিসহ নাশকতার অপর তিন মামলায়ও হাইকোর্টের জামিন আপিল বিভাগ বহাল রাখেন। এরপর মুক্ত হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যান ফখরুল। দেশে ফিরে আবেদন জানিয়ে আত্মসমর্পণের মেয়াদ দু’দফা বাড়িয়ে নেন তিনি।
নাশকতা, উস্কানি ও পরিকল্পনা অনুযায়ী পল্টন ও মতিঝিল এলাকায় হরতালের মধ্যে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় গত ৪ ও ৬ জানুয়ারি এসব মামলা দায়ের করে ওই দুই থানা পুলিশ। গত ৬ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।