একের পর এক হত্যার দায় আইএস স্বীকার করার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে অবস্থানকারী বিদেশীদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। সহিংস ঘটনাপ্রবাহ কুটনৈতিক মহল আর সহায়তাকর্মীদের বিচলিত করে তুলেছে। তাদের অনেকেই নিজেদের ঘরের ভেতর সীমাবদ্ধ রাখছেন। রাস্তায় হাটাচলা, সাইকেল চালানো আর ট্যাক্সিতে চড়া বন্ধ করা দিয়েছেন। ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, ইতালিয়ান এক মিশনারীর ওপর হামলার পর বাংলাদেশের পুলিশ স্থানীয় এক ইসলামপন্থী নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই হামলার দায় স্বীকার করে আইএস। সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠনটির দায় স্বীকার করা বিদেশীদের ওপর তৃতীয় হামলা এটা। ইতালিয়ান মিশনারি রেভ. পিয়েরো পারোলারিকে (৫৭) বুধবার দিনাজপুর জেলায় হামলা করা হয়। মাথায় আঘাত নিয়ে তিনি বেঁচে গেছেন। কিন্তু সম্প্রতি হামলার শিকার অপর দুই বিদেশী নিহত হন। একজন ইতালিয়ান সহায়তা কর্মী ও অপরজন জাপানি কৃষি কর্মী। এ সপ্তাহে আইএস তাদের নিজস্ব অনলাইন ম্যাগাজিনে এটা স্পষ্ট করেছে যে বাংলাদেশে ওপর দৃষ্টি দিয়েছে তারা। এছাড়াও আল-কায়েদা অনুপ্রাণিত কট্টরপন্থীদের হাতে ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগারদের ওপর নির্মম সিরিজ হামলার সঙ্গে লড়ছে বাংলাদেশ। দ্বিমুখী এ বিপদে শঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে যে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ইসলামপন্থী জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এর আগে মাঝে মধ্যে রাজপথে রাজনৈতিক সহিংসতা ছাড়া দেশটি ছিল বহুলাংশে শান্তিপূর্ণ। আর দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি মিত্র রাষ্ট্র। বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিদেশীদের ওপর হামরার গুরুত্ব স্বীকার করেছেন। তবে তারা বলছেন, এগুলো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিদের কাজ। বিরোধীরা ভাড়াটে গু-া দিয়ে এসব সহিংসতা ঘটাচ্ছে। এগুলো কোন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাজ নয়। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং সরকারের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক শীর্ষ উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ বলেন,‘ সব তথ্যপ্রমাণে বলছে এটা আইসিস নয়।’ ইতালিয়ান ত্রাণকর্মী হত্যায় চার সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা নেই। তারা স্রেফ অপরাধী।’ সহিংস ঘটনাপ্রবাহ বাংলাদেশের কুটনৈতিক আর সহায়তা সম্প্রদায়ের সদস্যদের আতঙ্কিত করে তুলেছে। তারা চলাফেরা সীমিত করে দিয়েছেন। সম্প্রতি এইডস বিষয়ক একটি সম্মেলন স্থগিত সহ অনেকগুলো অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় এইডস বিষয়ক বড় একটি সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে আরো কয়েকটি অনুষ্ঠান। মার্কিন দূতাবাস সাম্প্রতিক এক বার্তায় সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হুমকি এখনও বাস্তব ও বিশ্বাসযোগ্য আর পশ্চিমাদের ওপর হামলার বিষয় নিয়ে উদ্বেগ বিদ্যমান রয়েছে।