সাকা–মুজাহিদের রায় পুনর্বিবেচনার শুনানি আজ

Slider টপ নিউজ

5f7a74191b74e1e45c9ca9ec9d2d7274-Untitled-1

 

 

 

 

 

সর্বোচ্চ আদালতে আজ আবার উঠছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন। এর আগে শেষ চেষ্টা হিসেবে বিচারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী যে রিট করেছিলেন, গতকাল আদালত তা কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত এই দুজনের বিচার প্রক্রিয়া শেষ করার সঙ্গে দেশের চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে মিলিয়ে সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্যের কারণে আজকের শুনানির প্রতি দেশবাসীর নজর কিছুটা হলেও বেশি থাকছে বলে মনে করছেন আদালত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
গতকাল বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, আপিল বিভাগের মঙ্গলবারের কার্যতালিকার ২ নম্বরে মুজাহিদের আবেদন ও ৩ নম্বরে সাকা চৌধুরীর আবেদন শুনানির জন্য রাখা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চে এ আবেদন দুটির শুনানি হবে। আজ একই বেঞ্চের কার্যতালিকার ৪ নম্বরে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর আপিল শুনানির জন্য রাখা হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের পূর্ণ প্রস্তুতি আছে যেকোনো সময় পুনর্বিবেচনার আবেদন শুনানি করার। তবে কত সময় লাগবে, এটা আমাদের ওপর নির্ভর করে না। আমরা আশাবাদী, পুনর্বিবেচনাতেও আপিলের রায়ের কোনো পরিবর্তন হবে না।’
গত ৩০ সেপ্টেম্বর মুজাহিদ ও সাকা চৌধুরীর ফাঁসির সাজা বহাল রেখে আপিল বিভাগ থেকে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এর ১৪ দিনের মাথায় ওই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেন সাকা-মুজাহিদ। ২০ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন চেম্বার আদালত পুনর্বিবেচনার আবেদন দুটি শুনানির জন্য ২ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছিলেন। পরে সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানির দিন ১৭ নভেম্বর পুনর্নির্ধারণ করেন আপিল বিভাগ।
কার্যতালিকা থেকে বাদ রিট আবেদন: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গঠন, যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধের ক্ষেত্রে ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টির বিচারের ক্ষমতা যুক্ত করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীসহ চারটি বিষয়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ৩ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী। গতকাল বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ফরিদ আহমদ শিবলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য ছিল। তবে আদালত সেটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেন।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মহসিন রশিদ। সঙ্গে ছিলেন হুজ্জাতুল ইসলাম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করীম।
আমাতুল করীম প্রথম আলোকে বলেন, ট্রাইব্যুনাল গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এর আগেও রিট হয়েছিল। ২০১০ সালে হাইকোর্টের এ বিষয়ে একটি রায়ও আছে। নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া বিষয় শুনানি করে আদালত সময় নষ্ট করেননি। এ জন্য এটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। তবে হুজ্জাতুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আমরা আবেদনটি হাইকোর্টের অন্য বেঞ্চে নিয়ে যাব।’
প্রকাশ্যে মুজাহিদের আইনজীবী: মুজাহিদের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, পুলিশের হয়রানির ভয়েই তাঁরা তটস্থ। গত রোববার হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে আসতে পেরেছেন অন্যতম আইনজীবী শিশির মনির।
জামায়াতের নেতাদের আইনজীবীদের অভিযোগ, প্রথম দফায় ২ নভেম্বর মুজাহিদ ও সাকা চৌধুরীর পুনর্বিবেচনার আবেদন শুনানির জন্য ছিল। এর আগেই গত ২২ অক্টোবর সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়া মুজাহিদের অন্যতম আইনজীবী শিশির মনিরের ঢাকার বাসায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। তাঁকে না পেয়ে পুলিশ তাঁর গাড়িচালককে ধরে নিয়ে যায়। একই দিনে মতিউর রহমান নিজামীর আইনজীবী আসাদ উদ্দিনকে সিরাজগঞ্জ থেকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাঁকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডেও নেওয়া হয়। তিনি এখন কারাগারে আছেন। শিশির মনির ও আসাদ উদ্দিনকে হয়রানি না করার নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিলেন তাঁরা। আদালত আইনজীবীদের হয়রানি না করতে মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেন। এরপর তিনি প্রকাশ্যে আসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *