নিউ ইয়র্কে অপদস্থ ফখরুদ্দিন

Slider সারাদেশ

101499_IMG_8550

দীর্ঘদিন পরে জনসমক্ষে এসে অপদস্থ হলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দিন আহমদ। ঘটনাটি ঘটে নিউ ইয়র্কের বাঙ্গালী অধ্যুষিত জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার মসজিদে। গতকাল শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় তিনি এই মসজিদে এসেছিলেন নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আব্দুল মুনিম চৌধুরীর জানাযায় অংশ নিতেন। সেখানেই একদল বিক্ষুদ্ধ মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার মসজিদে প্রতি শুক্রবার এক ঘন্টার ব্যবধানে দু’টি জুম্মার জামাত অনুষ্ঠিত হয়। গতকালও তাই হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে অনেকটা নিভৃতে মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে বসবাসকারী ড. ফখরুদ্দিন আহমেদকে এর আগে কখনও বাংলাদেশীদের কোনো আয়োজনকে ঘিরে তাকে কোথাও দেখা যায়নি। গণমাধ্যমেও তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। গতকালই প্রথম প্রকাশ্যে নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকায় তাঁকে দেখা যায়। জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার মসজিদের প্রথম দফা জুমাার জামাতে অংশ নেন তিনি। কিন্তু প্রথমে অনেকেই লক্ষ্য করেননি তাঁর উপস্থিতি। জুম্মা শেষে জানাযার নামাজের আগে মসজিদ কমিটির সম্পাদক আক্তার হোসেন মাইকে ঘোষণা করেন পয, মরহুম আব্দুল মুনিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দিন তাঁর প্রয়াত বন্ধুর বিষয়ে কিছু বলবেন। তখনই মুসল্লিরা বুঝতে পারেন যে, ড. ফখরুদ্দিন সেখানে উপস্থিত আছেন এবং ওই মসজিদে নামাজ পড়েছেন।
এরপর ড. ফখরুদ্দিন আহমদ যখন বক্তৃতা শুরু করেন, তখনই একদল উত্তেজিত মুসল্লি নানারকম কটুক্তি করতে করতে তার দিকে তেড়ে যান। তাদের কেউ কেউ উচ্চস্বরে বলতে থাকেন, এই লোক বাংলাদেশকে ১০০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। কেউ কেউ বলেন, ‘ আপনি দেশটাকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছেন। আপনি গণতন্ত্র হত্যাকারী ’। খুব দ্রুতই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এ অবস্থায় ড. ফখরুদ্দিন দ্রুত তাঁর বক্তব্য শেষ করে মসজিদ থেকে বের হয়ে যান এবং মসজিদ কমিটির নেতারা তাকে নিরাপদে গাড়িতে তুলে দেন। গাড়িতে উঠার সময় তাঁকে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন  করেন, ‘ স্যার দেশ কেমন আছে ?’ কিন্ত কোনো জবাব না দিয়েই তিনি স্থান ত্যাগ করেন।
প্রসঙ্গত, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর পদে তিন বছরের চাকরি শেষে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের ব্যাবস্থাপনা পরিচালকের পদে যোগদান করেন ড. ফখরুদ্দিন। ওই পদে চাকরিরত থাকা অবস্থায়ই ২০০৭ সালের জানুয়ারী মাসে তিনি বিশেষ ধরণের তত্ত্বাধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হন। এরপর ২০০৮ সালের শেষ প্রান্তে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ২০০৯ সালের গোড়ার দিকে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর অকেটা নিরবেই দেশ ছাড়েন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসাবে পেশা জীবন শুরু করা এই আমলা। এরপর থেকে তিনি ওয়াশিংটন ডিসির অদূরে মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে বসবাস করছেন এবং গত প্রায় ৭ বছরে কখনও দেশে ফিরে যাননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *