রাতুল মন্ডল শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
লেখকদের মধ্যে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ম্যুরাল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে কথা সাহিত্যক ও নাট্যকার হুমায়ুন আহমেদের ৬৭তম জন্মদিনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। ১৩ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ৯টা ৪০মিনিটে মেহের আফরোজ শাওন, তার ছেলে নিনিত ও নিশাদ ম্যুরাল উদ্বোধন, ৯টা ৪৭মিনিটে কবর জিয়ারত ও ১০টা ১০মিনিটে কেক কেটে হুমায়ুন আহমেদের জন্মদিন উদ্বোধন করা হয়। গাজীপুর সদর উপজেলায় পিরুজালী গ্রামের নুহাশ পল্লীতে এদিনটি পালনের নানা কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানান নুহাশপল্লী কর্তৃপক্ষ।
ম্যুরালের স্থপতি চিত্রশিল্পী হাফিজ উদ্দিন বাবু জানান, অন্য লাখো লাখো ভক্তের মধ্যে আমিও একজন ভক্ত। হুমায়ুন আহমেদের প্রতি ভালবাসা থেকে মুলত ম্যুরাল নির্মাণের উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়। লেখকদের মধ্যে বাংলাদেশে এটিই সর্ববৃহৎ এবং প্রথম ম্যুরাল। ম্যুরালটি স্থাপন করতে পেরে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করছি।
নুহাশ পল্লীর ব্যবস্থাপক বুলবুল আহমেদ জানান, বুধবার রাত ১২টা ১ মিনিটে নূহাশ পল্লীতে ৩৬০টি মোম জ্বালিয়ে দিবসটির কর্মসূচী শুরু করা হয়। এছাড়া নুহাশ পল্লীর কর্মকর্তা-কর্মচারিদের পক্ষ থেকে কেক কাটা, হুমায়ুন আহমেদের ম্যুরাল উন্মোচন ও কবর জিয়ারত-দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। হুমায়ুন আহমেদ জীবিত থাকাকালে যেভাবে দিনটি পালন করতেন সেভাবেই জন্মদিনের অনুষ্ঠানিকতা পালন করা হবে। ঢাকার বাসায় মোমবাতি জ্বালিয়ে কেক কাটা হয়।
হুমায়ুনের ম্যুরালঃ
নুহাশ পল্লীতে হুমায়ুন আহমদেও হোয়াইট হাউজের পাশের আপেল গাছের কাছে তার একটি ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে। ৭০বর্গফুট (১০ফুট /৭ফুট) আকৃতির এ ম্যুরালটি নির্মাতা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অয়েল পেইন্টিং বিভাগ থেকে (মাস্টার্স অব ফাইন আর্টস) পাশ করা কুমিল্লার হাফিজ উদ্দিন বাবু। ঢাকার শাহবাগ এলাকায় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ম্যুরাল, ধানমন্ডিতে ভাষা সৈনিকদের ম্যুরাল, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের সামনে প্রধানমন্ত্রীর ম্যুরাল, বঙ্গবন্ধু হলের সামনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালও তার তৈরি বলে জানান বাবু।
ম্যুরাল নির্মানে ইতিবৃত্তঃ
হুমায়ুন আহমেদের ম্যুরালটি দেশের অন্য জায়গায় নির্মাণের চিন্তা ছিল। পরে চলতি বছরেই ম্যুরালটি নির্মানের জন্য হুমায়ুন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে প্রস্তাব দেয়া হয়। শিল্পী এবং শাওনের অনুমতি নিয়ে ১ অক্টোবর’১৫ তে ম্যুরাল নির্মাণের স্থান নির্বাচন করা হয়। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এটি সম্পন্ন করতে ২০দিন সময় লেগেছে।
ম্যুরালের অবস্থানঃ
হুমায়ুন আহমেদ নুহাশ পল্লীর যে বাংলোতে থাকতেন তার নাম হোয়াইট হাউজ। এর ঠিক সামনেই আপেল গাছের নিচে ম্যুরালটি স্থাপন করা হয়। নুহাশ পল্লীর মূল গেইট দিয়ে প্রবেশ করলেই মনে হবে হুমায়ুন আহমেদ স্বাগত জানাচ্ছেন। ম্যুরালের সামান্য বাম পাশেই রয়েছে হুমায়ুন আহমেদের সমাধি।
হিমুদের কর্মসূচীঃ
হিমু পরিবহনের সদস্য মাহমুদুল হাসান মাঝি জানান, তাদের একটি দল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে পায়ে হেটে নুহাশ পল্লীতে যাত্রা শুরু করেছে। পথে তারা ক্যান্সার সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরন করেন। নুহাশ পল্øীতে পৌঁছার পর পথশিশুদের নিয়ে একটি কেক কাটবেন বলে জানান তিনি।