ঢাকা : বর্ধিত সিটভাড়া প্রত্যাহারের দাবিতে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত রাজধানীর নীলক্ষেত কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের নারীরা রাস্তা অবরোধ করেছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবিতে রাস্তায় নেমে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
জানা গেছে, কাউকে কিছু না জানিয়ে গত ২৯ অক্টোবর হোস্টেলের সিটভাড়া দ্বিগুণ করে নোটিশ দেয় হোস্টেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত ৩০ ও ৩১ অক্টোবর হোস্টেল বন্ধ থাকায় নোটিশটি কারো নজরে আসেনি। পরে নোটিশ দেখে কর্মজীবী নারীরা ভাড়া বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে হোস্টেল সুপার সাবিকুন নাহার জানান, সরকারি সিদ্ধান্তে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। সবাইকে বর্ধিত ভাড়াই পরিশোধ করতে হবে।
পরে বিষয়টি নিয়ে কর্মজীবী নারীরা মহিলা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহীন আহমেদ চৌধুরীর কাছে গেলে তাদের দাবির কথা না শুনে উল্টো হোস্টেল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেন মহাপরিচালক।
কর্মজীবী নারীরা এরপর বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি সঙ্গে দেখা করেন। প্রতিমন্ত্রী ১০ নভেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে বলে জানান। কিন্তু ১০ নভেম্বর চলে গেলেও বিষয়টি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না দেয়ায় মঙ্গলবার রাতে কর্মজীবী নারীরা হোস্টেল ছেড়ে বের হয়ে আসে এবং রাস্তা অবরোধ করে- ‘বর্ধিত ভাড়া বাতিল কর।’ ‘আমাদের দাবি মানতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
এ বিষয়ে আন্দোলনের সমন্বয়ক কাজী পারভেজ সুলতানা পাতা বাংলামেইলকে বলেন, ‘কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই আমাদের সিটভাড়া দ্বিগুণ করা হয়। গত ২৯ অক্টোবর হুট করেই ভাড়া দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিয়ে একটি নোটিশ দেয়া হয় এবং বলা হয় ১ নভেম্বর থেকে দ্বিগুণ ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু আমরা বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি জানাতে রাস্তায় নেমে এসেছি।’
পরে হোস্টেল সুপার সাবিকুন্নাহার বাইরে এলে তাকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভকারীরা। হোস্টেলের প্রধান ফটক বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়। মহিলা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহীন আহমেদ চৌধুরী সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ না নিলে তারা হোস্টেলে ফিরবেন না বলেও ঘোষণা দেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হোস্টেল সুপার বলেন, ‘এরা সবাই আমার মেয়ের মতো। সব হোস্টেলেই বাড়ানো হয়েছে। আমরা তো সরকারি চাকরি করি। আমাদের কিছু করার নেই।’
এদিকে রাস্তা অবরোধ করে চলমান বিক্ষোভ সমাবেশের কাছে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসির আরাফাতের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’
মিরপুরেও কর্মজীবী নারীরা রাস্তায় নেমে এসেছেন বলে জানা গেছে।