ঢাকা: মৃত্যুকে এড়ানো অসম্ভব। তবে স্বেচ্ছায় মৃত্যু বা আত্মহত্যা ঠেকানো সম্ভব। আর এই সম্ভাবনার সম্ভাব্য দিকগুলো উপস্থাপন করতে এগিয়ে যাচ্ছে কোরিয়ার ‘ডেথ এক্সপেরিয়েন্স’ স্কুল।
সারাবিশ্বের তুলনায় দক্ষিণ-কোরিয়ায় আত্মহত্যার হার গড়ে প্রায় দ্বিগুণ। দেশের মানুষের বিষণ্নতা ও অন্যান্য মানসিক সমস্যা সমাধানের উদ্যোগে এগিয়ে যাচ্ছে স্কুলটি।
সৌল হায়েয়ো হিলিং সেন্টার ‘ডেথ এক্সপেরিয়েন্স’ প্রজেক্টের আয়োজক। অবসাদগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে জীবনের গুরুত্ব উপলব্ধি তৈরি করতে এখানে বিভিন্ন অনুশীলন ও কৃত্রিম অন্ত্যেস্টিক্রিয়ার আয়োজন করা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৪ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, সারাবিশ্বে বছরে আট লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে। এর মধ্যে দেখা গেছে, গত ১১ বছরে উচ্চ আয়ের দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। গত এক দশকে তা আরও দ্বিগুণ হয়েছে।
২০১২ সালে দেশটিতে ১৭ হাজার নয়শো আটজন ব্যক্তি আত্মহননে মারা যান।
তাই সৌল হায়েয়ো হিলিং সেন্টারের লক্ষ্য, আত্মহত্যা রোধে মানুষের মধ্যে তৈরি করতে হবে জীবনের প্রতি ভালোবাসা। এখানে একইসঙ্গে শেখানো হয় জীবন কী ও মৃত্যুই বা কেমন।
ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীদের ঐতিহ্যবাহী সাদা আলখাল্লা পরিয়ে কফিনে বসানো হয়। তারপর শেখানো হয়, কি করে জীবনের বাধা বিপত্তিকে গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে হয়। হিলিং সেন্টারের প্রধান জেয়ং ইয়ং মান এ ক্লাস নেন।
জেয়ং ইয়ং মানের বক্তব্য শেষে অংশগ্রহণকারীদের প্রিয় মানুষের কাছে চিঠি লিখতে বলা হয়। পরের ধাপ হলো লেখা চিঠিটি জোরে জোরে পড়া। এরপর যখন মৃত্যুর সময় হয় তখন ছাত্র-ছাত্রীরা কফিনে শুয়ে পড়েন ও কফিনের ঢাকনা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এভাবে ১০ মিনিট বন্ধ কফিনে থেকে তারা নিজের জীবন নিয়ে ভাবেন।
১০ মিনিট পর যখন তারা কফিন থেকে বেরিয়ে আসেন তখন তারা হয়ে ওঠেন নতুন এক মানুষ। বেশিরভাগের মধ্যেই দেখা দেয় ইতিবাচক মনোভাব। বেশিরভাগই দেখতে পান ভবিষ্যতের আশার আলো।