প্রচারে নামতে পারবেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা

Slider জাতীয়

 

 

untitled-3_171654

 

 

 

 

 

সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও তাদের সমমর্যাদার সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারে অংশ নিতে পারবেন। তবে প্রচারে অংশ নিয়ে তারা সরকারি সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন না। একই সঙ্গে এবার সরকারের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির’ সংজ্ঞার মধ্যে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও এমপিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দলভিত্তিক পৌর নির্বাচনের খসড়া আচরণবিধিতে এ সুযোগ রাখা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী বা তার সমমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রচারে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। গতকাল বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের
নেতৃত্বে ৫ সদস্যের কমিশন সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিশন সভায় অনুমোদিত খসড়া আচরণবিধি ও নির্বাচন বিধিমালায় পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আচরণবিধি ও নির্বাচন পরিচালনা বিধি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আজ আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হতে পারে বলে কমিশন সচিবালয়ের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা তাদের সমমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, হুইপ, সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়ে সরকারি সুবিধা ব্যবহার করবেন না।

এ ছাড়াও সংশোধিত খসড়া নির্বাচন বিধিতে দলের মনোনয়ন লাভে ব্যর্থ হয়ে বিদ্রাহী প্রার্থী হওয়ার পথ রুদ্ধ করা হয়েছে আইনের মারপ্যাঁচে। একই সঙ্গে অনেকটাই সহজ করে দেওয়া হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থিতা। এ নির্বাচনে প্রতি পৌরসভায় একটি রাজনৈতিক দল তার প্রার্থীর পক্ষে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবে। নিজ নিজ রাজনৈতিক দল তাদের তৃণমূলের মনোনয়ন পদ্ধতি ও কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে।
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দলভিত্তিক পৌরসভা নির্বাচনের জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আলোকে খসড়া প্রস্তুত করেছে ইসি। আজ যে কোনো সময় আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য এটি পাঠানো হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৫ নভেম্বরের আগেই ২৪৫ পৌরসভার তফসিল ঘোষণা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা :৫০ হাজারের বেশি ভোটার সমৃদ্ধ পৌর এলাকায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর জন্য মাত্র ২০০ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর লাগবে। ৫০ হাজারের কম ভোটার রয়েছে এমন পৌরসভার মেয়র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে লাগবে ১০০ ভোটারের সমর্থন। আর সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরদের জন্য মাত্র ৩০ জন ভোটারের সমর্থনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া যাবে। তবে কোনো প্রার্থী আগে কখনও পৌরসভার একই পদে নির্বাচিত হয়ে থাকলে তার ক্ষেত্রে ভোটারের সমর্থন ছাড়াই স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকবে।
রুদ্ধ হচ্ছে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার পথ :সংশোধিত খসড়া বিধিমালায় আইনের মারপ্যাঁচে আটকে দেওয়া হচ্ছে মনোনয়নবঞ্চিতদের। সংসদ নির্বাচনের মতোই দলের প্রাথমিক মনোনয়ন নিয়ে একাধিক ব্যক্তি প্রার্থী হতে পারবেন। তবে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে যার পক্ষে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে চূড়ান্তভাবে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পাবেন। দলের মনোনয়নবঞ্চিত অন্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাদ পড়ে যাবে। তবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগেই নির্ধারিত শর্ত মেনে যে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী বলেন, জাতীয় নির্বাচনের মতোই আচরণবিধি ও নির্বাচন বিধিমালা প্রস্তুত করা হয়েছে। দল যাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। বাকিদের মনোনয়ন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।
প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীক :দেশের নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মনোনীত মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী তার নিজ দলের সংরক্ষিত প্রতীক বরাদ্দ পাবেন। তবে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীদের জন্য ইসি ১২টি প্রতীক সংরক্ষণ করেছে। এগুলো হলো_ ১. ইস্ত্রি ২. কম্পিউটার, ৩. ক্যারমবোর্ড ৪. চামচ, ৫. জগ ৬. টাই ৭. নারিকেলগাছ ৮. বড়শি ৯ . মোবাইল ফোন ১০. রেল ইঞ্জিন ১১. হ্যাঙ্গার ও ১২. হেলমেট।
সংরক্ষিত আসনের স্বতন্ত্র কাউন্সিলরদের জন্য ইসি ১০টি প্রতীক সংরক্ষণ করেছে।
স্বতন্ত্র সাধারণ কাউন্সিলরদের জন্য রয়েছে ১২টি সংরক্ষিত প্রতীক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *