গাজীপুর-২ আসনে হাসান সরকারকে মেয়র ও সালাউদ্দিন সরকারকে এমপি প্রার্থী ঘোষণার দাবী

Slider গ্রাম বাংলা

গাজীপুর: গাজীপুর-২ নির্বাচনী আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে গাজীপুর-২ আসন থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত নেতারা। সম্মেলনে তাদের পক্ষ থেকে হাসান সরকাকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সালাউদ্দিন সরকারকে এমপি প্রার্থী ঘোষণার দাবী জানানো হয়।

আজ সোমবার(১৫ ডিসেম্বর)বেলা ১১ টায় টঙ্গীর আউচপাড়া আহসান উল্লাহ ইসলামিক ফাউন্ডেশনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন গাজীপুর-২ আসনের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে বিএনপির নেতা কর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি ও বিলুপ্ত গাজীপুর-৬ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী সালাউদ্দিন সরকার লিখিত বক্তব্য বলেন. গাজীপুর ৬ আসন বিলুপ্তের মাধ্যমে গাজীপুর ২ আসনের বাস্তব আমূল পরিবর্তন হয়েছে। আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের নবগঠিত গাজীপুর-৬ আসন বাতিল হয়ে গাজীপুর ২ আসন পূর্বাবস্থায় ফিরে এসেছে। এর ফলে গাজীপুর ২ আসনের রাজনৈতিক ভৌগোলিক ও নির্বাচনী বাস্তবতা মৌলিক পরিবর্তিত হয়েছে। বর্তমান কাঠামোয় গাজীপুর-২ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ। এই আসনটি দেশের অন্যতম বৃহৎ জটিল চ্যালেঞ্জিং সংসদীয় আসনে পরিণত হয়েছে। এরমধ্যে শুধু টঙ্গী দুইটি থানায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লক্ষ ৭৩ হাজার ৬ শত ৫৯ জন যা এই আসনের সংখ্যা গরিষ্ঠ ভোটার।

লিখিত বক্তব্যে আরোও বলা হয়, গাজীপুর-২ আসনে বিএনপি যাকে মনোনয়ন দিয়েছে ওই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি বাস্তবতায় নেওয়া হয়েছিল। ওই সময় গাজীপুর-৬ আসন বহাল ছিল। টঙ্গী গাছা পুবাইলের একাংশ ছিল আলাদা একটি সংসদীয় আসনের আওতায়। ভোটার চাপ ও ভৌগলিক ভারসাম্য ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।আজ সেই বাস্তবতা আর নেই। বর্তমান গাজীপুর-২ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর বাড়ি মহানগরীর কাউলতিয়া এলাকায়। এলাকাটি এই সংসদীয় আসনের সর্ব উত্তর প্রান্তে যেখানে ভোটার সংখ্যা মাত্র ৭৩ হাজার ৭৩৮ জন।

টঙ্গীর গুরুত্ব তুলে ধরে বলা হয়, গাজীপুর-২ আসনে নেতৃত্ব বিগত দিনে টঙ্গী থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে বিশেষ করে টঙ্গীর সরকার পরিবার এই আসনে নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক প্রভাব রেখেছে এবং এলাকার উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় তাদের অবদান অনস্বীকার্য। শুধু বিএনপি না অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকেও এই আসনে সঙ্গী কেন্দ্রিক নেতৃত্বই নির্বাচিত হয়ে আসছে। এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারের আমোলেও টঙ্গী থেকে সংসদ সদস্য নির্বচিত হয়ে আসছে। বিগত ২০০৮ সালে গাজীপুর ২ আসন থেকে বিএনপি’র মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল টঙ্গী সরকার পরিবার থেকে এরপর ২০১৮ সালে এই আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক সালাহ উদ্দিন সরকার কে। একই বছর গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল হাসান উদ্দিন সরকার কে। বিগত ফ্যাসিস্ট সংগ্রাম আন্দোলনে টঙ্গীর বি এনপি নেতা কর্মীদের ভুমিকা ছিল অকল্পনীয়। অনেক নেতা কর্মীরা জেল জুলুম খেটে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিল।

সংবাদ সম্মেলনে হাসান উদ্দিন সরকার ও সালাউদ্দিন সরকার বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, পুনর্গঠিত গাজীপুর-২ আসনে বর্তমান ভোটার ও ভৌগোলিক বাস্তবতা পূর্ণাঙ্গভাবে বিবেচনা, টঙ্গী, গাছা ও পূবাইল এলাকার সাংগঠনিক মতামত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে প্রয়োজনে বর্তমান মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা অথবা বিকল্প প্রার্থী মূল্যায়ন করে এমন একজন প্রার্থী কে মনোনীত করা হোক যিনি এই বিশাল জনসংখ্যা ও জটিল প্রতিযোগিতামূলক আসনে সর্বোচ্চ ভোট সংগ্রহ করে বিএনপিকে বিজয় করতে সক্ষম হবেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি ও বিলুপ্ত গাজীপুর-৬ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী সালাউদ্দিন সরকার, গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক ১ নং যুগ্ন আহবায়ক রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, গাজীপুর মগানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আফজাল হোসেন কায়সার, বিএনপি নেতা কাজী মাহবুবুল হক গোলাপ, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আব্দুল করিম, গাজীপুর মহানগর যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হাজী জসিম উদ্দিন ভাট, কারাগারে আটক যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল ইসলাম সরকারের ছেলে সরকার শাহনুর ইসলাম রনি ও গাজীপুর মহানগর বিএনপির নেতা আক্তারুজ্জামান সহ অসংখ্য নেতা- কর্মী।

সম্মেলনে হাসান উদ্দিন সরকার নিজেকে গাজীপুর সিটিকরপোরেশনের মেয়র ও তার ভাই সালাউদ্দিন সরকারকে গাজীপুর-২ আসনের এমপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন।

প্রসঙ্গত: গাজীপুর-২ আসনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মরহুম অধ্যাপক এম এ মান্নানের ছেলে ও গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মনজুরুল করিম রনিকে দলীয় মনোনয়ন দেয় বিএনপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *