হেফাজতে থাকা আসামির বক্তব্য মিডিয়ায়, রাজশাহীর পুলিশ কমিশনারকে তলব

Slider বাংলার আদালত


বিচারকের ছেলে হত্যা ও স্ত্রীকে আহত করার ঘটনায় আটককৃত অভিযুক্তের বক্তব্য পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় মিডিয়ার প্রচারের ঘটনায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনারকে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মামুনুর রশীদ এ আদেশ দেন। কমিশনকে আগামী ১৯ নভেম্বর আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

রাজশাহী মহানগর আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আদেশে বলা হয়, গেল বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের নগরীর রাজপাড়া থানার ডাবতলায় এলাকার ভাড়া ফ্ল্যাটে অভিযুক্ত লিমন মিয়া কৌশলে প্রবেশ করে তার নাবালক পুত্র তাওসিফ রহমানকে ধারালো ছুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে উপর্যুপরি আঘাত ও শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং তার স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসিকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত লিমন মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

পরে বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে দেখা যায়, অভিযুক্ত লিমন মিয়া পুলিশি হেফাজতে থাকাবস্থায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ভুক্তভোগীকে দোষারোপ করে বক্তব্য প্রদান করে। যা আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বনাম রাষ্ট্র ৩৯ বিএলডি ৪৭০ সহ বিভিন্ন মামলায় প্রদত্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

এমতাবস্থায়, পুলিশ হেফাজতে থাকাবস্থায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে মিডিয়ার সামনে বক্তব্য প্রদান করার সুযোগ প্রদান করায় কেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা আগামী ১৯ নভেম্বর স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। আদেশে বলা হয়, আদালতের নির্দেশক্রমে মিস কেস খোলা হলো। আদেশের জন্য নথি পেশ করা হলো।

এর আগে বিচারক আব্দুর রহমানের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে (১৯) হত্যার ঘটনায় শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর রাজপাড়া থানায় নিহতে বাবা আব্দুর রহমান বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলার আসামি হলেন- গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার মদনেরপাড়ার এইচ.এম. সোলায়মান শহীদের ছেলে লিমন মিয়া (৩৫)। তাকে ঘটনার পরে পুলিশ আটক করে।

এর আগে শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকাল দশটার দিকে নিহত সুমনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে। তবে এঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। এরপর দুপুরে তাকে দাফনের জন্য জামালপুর নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজশাহী নগরের ডাবতলা এলাকায় ভাড়া বাসায় খুন হন তাওসিফ। এসময় আহত হন হামলাকারী লিমন মিয়ার ও তাওসিফের মা তাসমিন নাহার লুসী। তারা রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *