
রাজধানী ঢাকার দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলো কমিয়ে একটি পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য মহানগরী গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ২০২২ সালে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) গেজেট আকারে প্রকাশ করেছিল। এই ড্যাপে এলাকাভিত্তিক জনঘনত্ব বিন্যাস, নগরজীবন রেখা, ট্রানজিটভিত্তিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন নাগরিক সুযোগ-সুবিধার মানদণ্ড যুক্ত করা হয়। তবে, প্রকাশের পর থেকেই এর সংশোধন নিয়ে বিভিন্ন মহলে মতপার্থক্য ও বিতর্ক তৈরি হয়। সম্প্রতি, সরকার এই ড্যাপ সংশোধনের প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে।
সংশোধিত ড্যাপে রাজধানীকে আগের ২৭৫টি ব্লকের পরিবর্তে ৬৮টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। গাজীপুরের অংশ বাদ দিয়ে নতুন পরিকল্পনায় ঢাকাকে এক হাজার ৯৪ বর্গকিলোমিটার এলাকায় সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। এতে ভবনের উচ্চতা বাড়ার পাশাপাশি সর্বোচ্চ জনঘনত্ব ২৫০ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ করা হয়েছে।
রাজধানীতে ব্লক সংখ্যা ৬৮টি করার মূল কারণ হলো— পরিকল্পনার সরলীকরণ এবং নগর উন্নয়নের প্রয়োজনে কিছু এলাকায় ভবনের উচ্চতা ও জনঘনত্ব বাড়ানো। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো— একটি সরল ও কার্যকর পরিকল্পনা কাঠামো তৈরি করা, যা সর্বোচ্চ জনঘনত্ব ২৫০ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ করার পাশাপাশি ভবনের উচ্চতা বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি করবে।
এছাড়া, ড্যাপ সংশোধনের ফলে রাজউক এলাকার প্রায় সব জায়গাতেই ভবনের উচ্চতা বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। সংশোধিত ড্যাপ এবং খসড়া ‘ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা–২০২৫’ অনুযায়ী, বহু এলাকায় ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে, আগে যেখানে সর্বোচ্চ পাঁচতলা ভবন নির্মাণের অনুমতি মিলত, সেখানে এখন ১০ থেকে ১১ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা যাবে। নতুন বিধিমালায় একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত যোগ করা হয়েছে। যেমন- কোনো প্লটে যত বেশি খোলা জায়গা রাখা হবে, ভবনের উচ্চতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সেই অনুপাতে অতিরিক্ত ছাড় দেওয়া হবে।
২০২২ সালে গেজেট প্রকাশের পর ড্যাপে একবার সংশোধন আনা হলেও আবাসন খাতের উদ্যোক্তারা ঢাকায় ভবনের উচ্চতা বাড়ানোর দাবি জানাতে থাকেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে, গত ১৯ অক্টোবর সরকার ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রণীত ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) সংশোধনীর প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয়। এই অনুমোদনের ভিত্তিতে শিগগিরই সংশোধিত ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে। ওই দিন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা কমিটির সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
ঢাকায় পরিবেশ, বসবাসকারী ও আবাসন ব্যবসায়ী— সবার স্বার্থ বিবেচনা করেই ড্যাপের সংশোধন করা হয়েছে। পাশাপাশি, পাঁচ কাঠার প্লটে ভবন নির্মাণে স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে
আশরাফুল ইসলাম, রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ
আগের সিদ্ধান্তে মালিক-ডেভেলপারের অসন্তোষ, বাড়ে ফ্ল্যাটের দাম-বাড়িভাড়া
ড্যাপে জনঘনত্ব এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করে ভবনের উচ্চতা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এই বিধিনিষেধের কারণে বিভিন্ন মহল, বিশেষ করে আবাসন ব্যবসায়ীরা তীব্র আপত্তি জানান। তখন থেকেই ড্যাপের নানা সংশোধন শুরু হয়। আগে অপ্রশস্ত রাস্তাতে আট থেকে ১০ তলা ভবন নির্মাণের সুযোগ ছিল। ড্যাপ গেজেট আকারে প্রকাশের পর সেই সুযোগ বন্ধ হয়ে যায় এবং চার থেকে পাঁচতলা নির্মাণের বিধান রাখা হয়।
এই সিদ্ধান্তে জমির মালিক, ডেভেলপার ও হাউজিং প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। তারা বাণিজ্যিকভাবে ভবন নির্মাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিলে রাজধানীতে ফ্ল্যাটের দাম ও বাড়িভাড়া বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় আবাসন ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা বারবার ড্যাপ সংশোধনের জন্য চাপ দিতে থাকেন।
সর্বশেষ সংশোধনী আনার আগে, ড্যাপের খসড়ায় ১২ থেকে ১৬ ফুট প্রশস্ত রাস্তার পাশে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) ধরা হয়েছিল ১.৭৫। এর অর্থ হলো— এমন প্রশস্ত রাস্তার পাশে পাঁচ কাঠার প্লটে পার্কিংসহ সর্বোচ্চ পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করা যেত।
ওই সময়ের হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আগের ড্যাপে ৬ থেকে ৮ ফুট প্রশস্ত রাস্তার পাশের ফ্ল্যাটের এফএআর ধরা হয় ১.২৫। ৮ থেকে ১২ ফুট প্রশস্তের রাস্তার এফএআর ১.৫, ১৬ থেকে ২০ ফুট প্রশস্ত রাস্তার এফএআর ২, ২০ ফুট রাস্তার এফএআর ২.৫, ৩০ ফুট রাস্তার এফএআর ৩ এবং ৪০ থেকে ৬০ ফুট রাস্তার এফএআর ৩.৫ থেকে ৩.৭৫ ধরা হয়। ফলে, পাঁচ কাঠার একটি জমিতে আগে আট ও দশতলার নকশা পাওয়া যেত, তখন এটি হয়ে যায় পাঁচতলার। ভবনের ব্যবহারযোগ্য স্পেসের পরিমাণও সেই অনুপাতে হতো। আগে যেখানে প্রশস্ত রাস্তা না থাকলেও ৮ থেকে ১০ তলা ভবন করা যেত, পরে সেখানে অনুমোদন পাওয়া যেত ৪ বা ৫ তলার। এ কারণে স্বল্প প্রস্থের রাস্তার পাশের জমির মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন। দাম বেড়ে যেতে থাকে ফ্ল্যাটের। সেই সঙ্গে আবাসন বা ডেভেলপার কোম্পানিগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে শুরু করেছিলেন। এরপর থেকে বেঁকে বসেন আবাসন ব্যবসায়ীরা। শুরু হয় ড্যাপ সংশোধনের দাবি। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বেশকিছু শর্ত শিথিল করা হয়।
ব্লকভিত্তিক ৫০ শতাংশ এলাকা খেলার মাঠ ও পার্কের জন্য সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত
সম্প্রতি সরকার ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) সংশোধনীর প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে। এই সংশোধনীতে ঢাকার অধিকাংশ এলাকায় ভবনের উচ্চতা সীমা বাড়ানো, মুখ্য ও সাধারণ জলস্রোত একীভূত করে বন্যা প্রবাহ অঞ্চল ঘোষণা এবং ব্লকভিত্তিক উন্নয়নে অন্তত ৫০ শতাংশ এলাকা খেলার মাঠ ও পার্কের জন্য সংরক্ষণ করার মতো বিষয়গুলো যুক্ত হয়েছে।
ড্যাপের এই নতুন সংশোধনীর ফলে এখন রাজউক এলাকার প্রায় সব জায়গাতেই ভবনের উচ্চতা বাড়ছে। সংশোধিত ড্যাপ এবং ‘খসড়া ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা– ২০২৫’ অনুযায়ী— বহু এলাকায় ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানো হয়েছে। ফলে আগে যেখানে সর্বোচ্চ পাঁচতলা ভবন নির্মাণের সুযোগ ছিল, এখন সেখানে ১০ থেকে ১১ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা যাবে।
এছাড়া, নতুন বিধিমালায় একটি প্রণোদনা যুক্ত হয়েছে। যেমন— কোনো প্লটে যত বেশি খোলা জায়গা রাখা হবে, ভবনের উচ্চতা তত বেশি করার জন্য অতিরিক্ত ছাড় দেওয়া হবে। অর্থাৎ, যদি কোনো এলাকায় এফএআরের মান ২.৫ হয়, তাহলে ন্যূনতম ফাঁকা জায়গা রেখে ৪ থেকে ৫ তলা ভবন নির্মাণ করা যাবে। কিন্তু, জমির মালিক যদি আরও বেশি জায়গা খালি রাখেন, তবে একই স্থানে ৭ থেকে ৮ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণের অনুমতি পাওয়া যাবে।
ড্যাপের সংশোধন পুরোপুরি আবাসন ব্যবসায়ীদের স্বার্থে করা হয়েছে। আগের ড্যাপে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) যা ছিল, সেটাই বেশি ছিল; কিন্তু এখন আবার তা দ্বিগুণ করা হলো। এসবের ফলে ঢাকার জনঘনত্বের চাপ আরও বাড়বে
আদিল মোহাম্মদ খান, সভাপতি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স
যেসব এলাকায় এফএআর উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হয়েছে তার মধ্যে শেওড়াপাড়ায় ২ থেকে ৩, কড়াইলে ২ পর্যন্ত, মহাখালীতে ২.২ থেকে ৩.৩, মোহাম্মদপুরে ২.৭ থেকে ৩.৪, পুরান ঢাকায় ২.৬ থেকে ৩.৩, খিলগাঁওয়ে ২ থেকে ৩.৪, মিরপুরে ২.৮ থেকে ৩.৪, দক্ষিণখানে ২ থেকে ৩.১, টঙ্গীতে ২.৪ থেকে ৩.২, রূপগঞ্জে ২ থেকে ৩.২, সাভারে ২ থেকে ৩.৪, মিরপুর ডিওএইচএসে ২.৫ থেকে ৪.৮ এবং খিলক্ষেত আবাসিক এলাকায় ২ থেকে বাড়িয়ে ৪.৪ করা হয়েছে।
একইসঙ্গে বারিধারা, মোহাম্মদপুর, পান্থপথ, ডেমরা, বসুন্ধরা, কচুক্ষেত, উত্তরা, লালমাটিয়া, মগবাজারসহ আরও বেশকিছু এলাকায় বিদ্যমান এফএআরের মানের তুলনায় সর্বোচ্চ ১.৫ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। শুধু এফএআরের মান বাড়ানো নয়, যদি ব্লকভিত্তিক উন্নয়নে একাধিক প্লট একীভূত করা হয়, তাহলে নির্ধারিত এফএআরের ওপর অতিরিক্ত ০.২৫ থেকে ০.৭৫ পর্যন্ত বোনাস দেওয়া হবে।
মালিক যত বেশি খোলা জায়গা ছাড়বেন, ভবনের উচ্চতা তত বেশি হবে
রাজউক জানিয়েছে, নতুন বিধানে কোনো প্লট বা জমির মালিক যত বেশি খোলা জায়গা ছেড়ে দেবেন, তার প্লটে ভবনের উচ্চতা তত বেশি করার অনুমতি মিলবে। ফলে ভবনের উচ্চতা বাড়লেও খোলা জায়গা ও সবুজ এলাকা সংরক্ষণের সুযোগ বাড়বে। উচ্চতা বাড়ানোর পাশাপাশি ফ্লোর ইউনিট বা আবাসন ইউনিটের সংখ্যাও প্রায় সব জায়গায় বেড়েছে, যা অনেক ক্ষেত্রে দ্বিগুণেরও বেশি। ফ্লোর এরিয়া রেশিও বাড়ানোর কারণে ফ্ল্যাট নির্মাণের সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
এলাকাভেদে আবাসন ইউনিটের হার মূল ড্যাপের তুলনায় বাড়ায় সব এলাকায় ফ্ল্যাটের সংখ্যা বাড়বে। যেমন— মূল ড্যাপে পুরান ঢাকায় আবাসন ইউনিটের হার ছিল ১.২, যা এখন দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে ৩.১ করা হয়েছে। ফলে পুরান ঢাকার পাঁচ কাঠা জমিতে আগে যেখানে সর্বোচ্চ ছয়টি ফ্ল্যাট তৈরি করা যেত, এখন সেখানে ১৩টি পর্যন্ত ফ্ল্যাট নির্মাণের সুযোগ থাকবে।
সংশোধিত ড্যাপের তথ্যানুযায়ী, ইউনিটের হার মোহাম্মদপুরে ১.৭ থেকে বাড়িয়ে ২.৮, পুরান ঢাকায় ১.২ থেকে ৩.১, টঙ্গীতে ১.২ থেকে ৩, রূপগঞ্জে ১.২ থেকে ৩, সাভারে ১.২ থেকে ৩, মিরপুর ডিওএইচএসে ১.৯ থেকে ২.৭, দক্ষিণখানে ফ্লোর ইউনিট ১.৪ থেকে ২.৯, মিরপুরে ১.৭ থেকে ২.৯, শেওড়াপাড়ায় ১.৩ থেকে ৩, মহাখালীতে ১.৯ থেকে ৩.২ এবং খিলক্ষেত আবাসিক এলাকায় ১.২ থেকে ২.৬ করা হয়েছে।
এছাড়া, ‘খসড়া ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালা-২০২৫’ এ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেমন—
অকুপ্যান্সি সার্টিফিকেট : আগে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অকুপ্যান্সি সার্টিফিকেট নবায়ন বাধ্যতামূলক থাকলেও, নতুন বিধিমালায় একবার সার্টিফিকেট নিলেই তা আজীবনের জন্য কার্যকর থাকবে।
স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) : পাঁচ কাঠা বা তার বেশি জমির প্লটে এসটিপি স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অনুমোদন ফি : ২০০৮ সালের পুরোনো বিধিমালা অনুযায়ী, ভবন নির্মাণের আবেদন করার সময়ই অনুমোদন ফি দিতে হতো কিন্তু নতুন নিয়মে ভবন নির্মাণের সুপারিশপ্রাপ্তির পর ফি পরিশোধ করতে হবে।
আবেদন নিষ্পত্তির সময়সীমা : আবেদন নিষ্পত্তির সময়ও ৪৫ দিন থেকে বাড়িয়ে ১৮০ দিন করা হয়েছে।
ঢাকার জনঘনত্বের চাপ আরও বাড়বে : আদিল মোহাম্মদ খান
রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় পরিবেশ, বসবাসকারী ও আবাসন ব্যবসায়ী— সবার স্বার্থ বিবেচনা করেই ড্যাপের সংশোধন করা হয়েছে। পাশাপাশি, পাঁচ কাঠার প্লটে ভবন নির্মাণে স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশনের (রিহ্যাব) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী মন্তব্য করেন, সংশোধনের আগে ড্যাপে ভবনের উচ্চতা নিয়ে যেসব বাধা ছিল, তা এখন দূর হয়েছে। ফলে আবাসন খাত আরও বেশি এগিয়ে যাবে, যা দীর্ঘদিন ধরে খারাপ অবস্থার মধ্যে ছিল।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স-এর সভাপতি আদিল মোহাম্মদ খান ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, ‘ড্যাপের সংশোধন পুরোপুরি আবাসন ব্যবসায়ীদের স্বার্থে করা হয়েছে। আগের ড্যাপে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) যা ছিল, সেটাই বেশি ছিল; কিন্তু এখন আবার তা দ্বিগুণ করা হলো। এসবের ফলে ঢাকার জনঘনত্বের চাপ আরও বাড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে ঢাকার ওপর জনঘনত্বের চাপ কমানোর কথা, সেখানে তা ২৫০ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ করা মোটেও সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। ফলস্বরূপ, কেন্দ্রীয় ঢাকার আশপাশের এলাকাগুলোতে সুউচ্চ ভবনের সংখ্যা বাড়বে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। ড্যাপের সংশোধন যেভাবে করা হয়েছে, তা হতাশাজনক এবং এতে ঢাকার ওপর চাপ আরও বাড়বে।’
