আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন পিছিয়ে যাচ্ছে। আগামী বছরের শুরুর দিকে এই সম্মেলন হবে। এর আগে আগামী ডিসেম্বর মাসে জাতীয় সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। দলের কয়েকজন নীতিনির্ধারক সমকালকে জানিয়েছেন, পৌরসভা নির্বাচনের কারণে আওয়ামী লীগের সম্মেলন পিছিয়ে দেওয়ার বিষয় নিয়ে এরই মধ্যে দলের ভেতরে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। শিগগির এ ব্যাপারে কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেদারল্যান্ডস সফরের পর নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে এ বৈঠক।
তবে পৌরসভা নির্বাচনের পর এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে জানুয়ারি মাসে এ সম্মেলন আয়োজনের কথা ভাবা হচ্ছে বলে দলের একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহও এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন বছরে জাতীয় সম্মেলন আয়োজনের কথা জানিয়েছেন।
দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ড. নুহ-উল-আলম লেনিন বলেছেন, ডিসেম্বরে পৌরসভা নির্বাচন। তাই জানুয়ারি মাসে জাতীয় সম্মেলন আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে। কাজী জাফর উল্লাহ বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সম্মেলন আয়োজনের বিষয় নিয়ে কোনো ধরনের সাংগঠনিক বাধ্যবাধকতা নেই। তবে আগামী মার্চের মধ্যে সম্মেলন করতে হবে।
দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, সামনে পৌরসভা নির্বাচন। এ অবস্থায় ডিসেম্বরের মধ্যে সম্মেলন করাটা কতটা যুক্তিপূর্ণ হবে, তা চিন্তার বিষয়। তবে এ নিয়ে দলীয়ভাবে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, দলীয়ভাবে পৌরসভা নির্বাচন হলে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্তকরণের কাজ শুরু হবে নভেম্বরের শেষের দিকে। ডিসেম্বরজুড়ে নেতাকর্মীরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকবেন। এ কারণে জানুয়ারিতে জাতীয় সম্মেলনের সম্ভাবনা বেশি।
এদিকে, দলের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দীর্ঘদিন লন্ডনে অবস্থানের পর গতকাল শনিবার দেশে ফিরেছেন। তিনি গত ২০ সেপ্টেম্বর লন্ডন সফরে গিয়েছিলেন। সৈয়দ আশরাফ আজ-কালের মধ্যেই দলের সম্মেলন কার্যক্রম নিয়ে সাংগঠনিক প্রস্তুতি শুরু করবেন।
বর্তমানে জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ৭৭টি সাংগঠনিক জেলা সম্মেলনের কাজ প্রায় গুছিয়ে আনা হচ্ছে। সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন রাজশাহী বিভাগের আওতাধীন নয়টি জেলার সম্মেলন সম্পন্ন করেছেন। রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা জেলার সম্মেলন হয়নি। তবে এই বিভাগের অন্য সাত জেলার সম্মেলন করেছেন আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার, চাঁদপুর, কুমিল্লা উত্তর ও দক্ষিণ জেলার সম্মেলন হয়নি। চুয়াডাঙ্গায় সম্মেলন না হলেও খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় সম্মেলন হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম জানিয়েছেন, বরিশাল বিভাগের চার জেলায় সম্মেলন হয়েছে। দ্রুতই ভোলা, পিরোজপুর ও ঝালকাঠি জেলার সম্মেলন হবে। সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেছেন, সিলেট বিভাগের তিন জেলায় সম্মেলন হয়েছে। দ্রুতই সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের সম্মেলন হবে।
সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন জানিয়েছেন, ১১ নভেম্বর গোপালগঞ্জ ও ১২ নভেম্বর রাজবাড়ী জেলার সম্মেলন হবে। নেত্রকোনার সম্মেলন প্রক্রিয়াও প্রায় শেষের দিকে। দ্রুতই গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি ঘোষণা করা হবে। ঢাকা বিভাগের শরীয়তপুর, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জ জেলায় এখনও সম্মেলন হয়নি।