মধ্যরাত থেকে শুরু ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টা থেকে শুরু হচ্ছে মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। যা আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বছর আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে-পরে ইলিশের ডিম ছাড়ার আসল সময়। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পদ্মা-মেঘনা নদীতে ছুটে আসে। এই সময়কে বিবেচনায় নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার পদ্মা-মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবী এলাকা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটারের নিষেধাজ্ঞার সময়ে কোনো জেলে নদীতে নামতে পারবেন না। ৪৫ হাজার ৬১৫ জন কার্ডধারী ও নিবন্ধিত জেলে রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার সকালে মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে দল বেধে ঘাটে ফিরছেন জেলেরা। তীরে নোঙর করে ফিশিংবোট, ট্রলার থেকে ইঞ্জিন, জালসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিরাপদ স্থানে রেখে দিচ্ছেন। আবার কোনো কোনো জেলে এসব সরঞ্জাম নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে।

চাঁদপুর সদরের হরিনা ঘাটের জেলে সবুজ মিয়া বলেন, সরকার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, এটা আমরা মেনে নিয়েছি। আমরা নদী থেকে জাল উঠিয়ে ফেলেছি। নিষেধাজ্ঞার সময় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কিছু অসাধু জেলে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় এসে মাছ ধরে থাকে। তাই এই অভিযান সফল করতে হলে দক্ষিণাঞ্চলের মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে। তারা নিষেধাজ্ঞার সময়ে মাছ ধরার কারণে ভরা মৌসুমে আমরা ইলিশ পাই না নদীতে।

আরেক জেলে মনির হোসেন বলেন, অভিযানে আমরা সবদিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। কিস্তি আছে, ছেলে-মেয়ে পড়ালেখা করে, ৬-৭ জন নিয়ে সংসার চালাই। প্রচুর টাকা দেনা-পাওনায় আছি। ২২ দিন সরকার যদি বড় একটা অনুদান দেয় তাহলে ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারব। কারণ আমি মাছ ধরার ওপর নির্ভর করে থাকি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় চাঁদপুরের নদীতে ২২ দিন অভিযান পরিচালনা করা হবে। ইতোমধ্যে জেলা টাস্কফোর্সের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। নদীর প্রবেশ মুখে খালের মুখগুলো বন্ধ করা হয়েছে। জেলেদের নৌকার ইঞ্জিনগুলো খুলে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নদীতে জাল ও নৌকা শুন্য দেখতে চাই। আমরা চাই না কোনো জেলে এই শাস্তির আওতায় আসুক। অবৈধভাবে নদীতে মাছ ধরলে ১-২ বছরের জেল অথবা ৫ লাখ টাকা জরিমানা, কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জেলেদের জন্য সরকার ভিজিএফ চাল বিতরণের জন্য বরাদ্দ দিয়েছে। এবার তারা চাল পাবে ২৫ কেজি। আমরা আশা করি তারা অভিযান চলাকালে নদীতে নামবে না। চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক ঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা যেন নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের কাছ থেকে কিস্তির টাকা না নেন। সেই জন্যই তাদের চিঠি দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *