চেয়ারম্যানকে সুন্দর সুন্দর মেয়ে দিতে না পারার অভিযোগ নারী মেম্বারের! ভিডিও ভাইরাল

Slider বিচিত্র


গাজীপুর: গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়নের তিন মেয়াদ ধরে মহিলা ইউপি সদস্য মর্জিনা বেগম। এলাকায় জনপ্রিয়তা না থাকলে তিনবার ভোটে নির্বাচিত হওয়া যায় না। দীর্ঘ সময়ের জনসেবিকা জীবনের শেষ প্রান্তে এসে কথার বোমা ফাটিয়ে দিলেন। ভিডিও বক্তব্যে তিনি বলেছেন,সুন্দরী মেয়েদের কাজ চেয়ারম্যান আগে করে দেন। অনেকবার চেয়ারম্যান তাকে সুন্দরী মেয়ে এনে দিতে বলেছেন। কিন্তু তিনি তা পারেননি। সুন্দর সুন্দর মেয়ে দিতে না পারায় চেয়ারম্যান তাকে দেখতে পারেন না। এই ব্যার্থতার জন্য একবার তাকে চেয়ারম্যান মেরেছেনও। পরিষদে দেখা হলেই অশ্লীল ভাষায় বকাবকি করেন চেয়ারম্যান। অবশেষে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল।

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মহিলা মেম্বারের এমন বিস্ফোরক মন্তব্যের ভিডিও ভাইরাল প্রসঙ্গে মহিলা মেম্বার মর্জিনা বেগম বলেন, চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব মেয়ে পাগল। সব সময় সুন্দরী মেয়েদের নিয়ে সময় কাটায়। পরিষদ রেখেও নিজের বাগান বাড়িতে তিনি শালিস দরবার করেন। সুন্দরী মেয়েদের নিয়ে আড্ডা দেয়াই তার কাজ। আমি সুন্দরী মেয়ে দিতে পারি না, তাই আমাকে দেখলেই গালিগালাজ করে। একবার মেরেছেও। এখন পরিষদের ভেতরে আমাকে মারার চেষ্টা করেছে। তাই আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তাই ন্যায় বিচার চাই।

আরেব অভিযোগকারী নুরু মিয়া বলেন, একাধিকবার মামলার আসামী হাবিব চেয়ারম্যান এলাকার মানুষকে অত্যাচার নির্যাতন করে শেষ করে দিচ্ছে। আমি প্রতিবাদ করায় আওয়ামীলীগের আমলে আমাকে অসংখ্য মামলা দিয়েছে। আমি ন্যায় বিচার চাই। হিন্দুদের জমি উদ্ধার চাই। হাবিব চেয়ারম্যানের অত্যাচার থেকে বাড়িয়া ইউনিয়নের জনগনকে বাঁচাতে আমি তার গ্রেপ্তার দাবী করছি।

এ বিষয়ে বাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব সাংবাদিকদের বলেন, মহিলা মেম্বারের অভিযোগ মিথ্যা। সে কার্ড দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে। এসব জিঞ্জাসা করলেই মিথ্যা অভিযোগ করে। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হিন্দুদের জমি দখলের অভিযোগকারী নুরু মিয়ার অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, নুরুর অভিযোগ সত্য নয়। তিনিও অভিযোগ করবেন বলে জানান।

গাজীপুর সদর উপজেলার জয়দেবপুর থানার ওসি তৌহিদ আহমেদ বলেন, চেয়ারম্যান হাবিবের বিরুদ্ধে মহিলা মেম্বারের অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়টি তদন্তের জন্য আলমগীর নামে একজন অফিসার দেয়া হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুর সদর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান খান হাবিবকে গত বছর ২৫ অক্টোবর গ্রেপ্তার করে জয়দেবপুর থানা পুলিশ। এলাকায় তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির ডান হাত বলে পরিচিত ছিলেন। কিছু দিন পর তিনি জামিনে মুক্ত হন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, হাবিবুর রহমান খান হাবিবের বিরুদ্ধে হিন্দুদের জমি দখল, মাছের খামার দখল, বিল ভরাট, মাদকসহ একাধিক মামলা ও অভিযোগ রয়েছে।
আওয়ামী লীগের আমলে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় একাধিক সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে তার ব্যাপক ভূমিকা ছিল। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।

তিনি গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি ও প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। প্রতিমন্ত্রীর পরিচয়ে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন। তবে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুমকিকে ছেড়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আক্তারউজ্জামানের পক্ষ নেন তিনি। এ জন্য দল থেকে তাকে বহিষ্কারও করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *