
ছবি: বিদ্যালয়ের সামনে অভিযোগকারী অভিভাবক বৃন্দের একাংশ
ফাহিমা নূর গাজীপুরঃ গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়ালি নলজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগে অভিভাবকদের তোপের মুখে পড়েছেন প্রধান শিক্ষক। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে ছুটি নিতে পরামর্শ দিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর মহানগরীর ৩৫ নং বারিয়ালী নলজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এই তথ্য জানা যায়।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন মোসাঃ মমতাজ মহল।
আওয়ামীলীগ সরকারের মন্ত্রী এমপিদের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অবৈধডাবে অর্থ আদায় করেন তিনি। শিক্ষার্থী ভর্তির নামে শিক্ষার্থীদের কাজ থেকে ৩০০ হতে ৫০০ টাকা আদায় করেন। সরকারি অনুমোদন ছাড়া শুধুমাত্র কমিটির রেজুলেশন করে দুই লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ৪টি গাছ কেটে ফেলেন। এর বিনিময়ে বিদ্যালয়ের ৩/৪ টি আসবাবপত্র ক্রয় করেন।
শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী বায়েজীদ বোস্তামির মা বিথী আক্তার জানান, তার ছেলের ভর্তির জন্য ৩০০ টাকা নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। প্রত্যয়নপত্রের জন্য ২০০ টাকা দিয়েছেন রাবেয়া খাতুন। একই ধরণের অভিযোগ অভিভাবক নৌরিন আক্তার, আকলিমা খাতুন ও মরিয়ম বেগম সহ অনেকের।
প্রত্যয়নপত্রের টাকা উত্তোলনকারী সহকারি শিক্ষক শান্তা রাণী বিশ্বাস জানান, তিনি টাকা তুলে নৈশ প্রহরী কাম দপ্তরি মোঃ শফিকুল ইসলাম এর কাছে জমা দেন প্রধান শিক্ষক এর নির্দেশে। দপ্তরি শফিকুল ইসলাম টাকা নেওয়োর কথা স্বীকার করেন। ভর্তির টাকা উত্তোলন করেন সহকারি শিক্ষক মাহবুবুর রহমান।
ছুটিতে থাকা মাহবুবুর রহমান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানান, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে টাকা উত্তোলন করে প্রধান শিক্ষককেই দিয়ে দেন।
এছাড়া এই বিদ্যালয়ে অভিভাবকদের বসার কোন জায়গা নেই। শিক্ষার্থীদের ময়লা পানি পাম করতে হয়। এসব সহ অসংখ্য অভিযোগ অভিভাবকদের।
এ সকল অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মমতাজ মহল বলেন শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কোন টাকা উত্তোলনের নির্দশ দিইনি। কেউ আমাকে কোন টাকা দেয়নি।
গাছ কাটার বিষয়ে তিনি বলেন, কমিটির সভায় রেজুলেশন করে বিদ্যালয়ের স্বার্থে গাছ কাটা হয়েছে তবে টেন্ডার করা হয়নি।
এই বিষয়ে গাজীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদ আলম ভূইয়া জানান, মমতাজ মহলের বিরুদ্ধে অভিভাবকদের করা একটি লিখিত আববেদন তদন্ত করছি। অভিযোগের মাত্রা বিবেচনায় এই প্রধান শিক্ষককে ছুটি নিতে বলা হয়েছে।
