নোয়াখালীতে বাড়ছে বৃষ্টির দাপট, আতঙ্কে পানিবন্দি মানুষ

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি

দিনের শুরুতে আবহাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নোয়াখালীতে আবারও শুরু হয়েছে বৃষ্টি। এতে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পানিবন্দি মানুষের মধ্যে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এরপর বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে জনমনে। তারপর সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মানুষজন স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশায় ছিলেন। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফের বৃষ্টি শুরু হলে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া ও পানিবন্দি মানুষদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়।

জানা গেছে, নোয়াখালী সদর, সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ ও সুবর্ণচরের বিভিন্ন অঞ্চলের নিচু এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে জেলা শহর মাইজদীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, মৎস্য অফিস, জেল খানা সড়ক, পাঁচ রাস্তার মোড়, পৌর বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাগুলো তলিয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা এখনও অনেক এলাকায় কার্যকর না হওয়ায় ঘরবাড়ি ও সড়কে পানি জমে আছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কর্মজীবী মানুষ এবং যানবাহনের চালকদের।

জেলা শহরের বাসিন্দা হৃদয় পাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, এভাবে যদি টানা বৃষ্টি শুরু হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। কেননা
বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে জলাবদ্ধতা থেকে স্থায়ী বন্যা পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মো. শওকত আলী নামের আরেক বাসিন্দা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃষ্টি আসলেই আমাদের আতঙ্ক বেড়ে যায়। বেশ কয়েকদিন আমরা টানা বৃষ্টিতে নিমজ্জিত। এতে করে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। জেলার একটি পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা দরকার। আমাদের এক রাস্তার শহর কিন্তু রাস্তা থেকে ড্রেন উচু। কোথাও কোথাও অপরিকল্পিত ড্রেন যার কোনো আউট লাইন নাই। উল্টো ড্রেন দিয়ে সড়কে পানি প্রবেশ করছে।

অশ্বদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা শিউলি বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের বাড়িতে পানি ঢুকে রান্নাঘর ডুবে গেছে আজ তিন দিন। স্বামীর কাজকর্ম নাই। কিন্তু এনজিও গুলো কিস্তি দেওয়ার জন্য বাসায় আসছে। আমাদের নিজেদের খাওয়ার কোনো উপায় নাই সেখানে কিস্তি দিমু কই থেকে। আমরা অনেক কষ্টে অসুস্থ ছেলে সন্তান নিয়ে বসবাস করছি।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম ঢাকা পোস্টকে বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি বেড়েছে। আমরা বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য কাজ করছি। এছাড়া পানিবন্দি পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *