ঢাকা: স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন ১৪ দলের শরিকরা চায় জোটবদ্ধভাবে অংশ নিতে। তবে বিষয়টি আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে বলে জানান ১৪ দলের নেতারা।
কিন্তু জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগ এ ব্যপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি-না তার ওপরও এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভর করবে।
আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে স্থানীয় সরকার স্তরের পৌরসভা নির্বাচন। এরপর আগামী বছর অনুষ্ঠিত হবে স্থানীয় সরকার স্তরের সবচেয়ে বড় নির্বাচন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের অবস্থান থেকে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগসহ জোটের অন্য শরিকরাও পৌর নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ নির্বাচন জোটগতভাবে অংশ নেবে না আলাদা আলাদাভাবে অংশ নেবে সে ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ১৪ দলের শরিকদের জোটগতভাবে অংশগ্রহণের আগ্রহ রয়েছে।
আগামীতে স্থানীয় সরকার স্তরের সকল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে দলীয়ভাবে এবং দলীয় প্রতীকে। গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সংক্রান্ত স্থানীয় সরকার (সংশোধন) আইন অনুমোদন করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদের গত দু’টি নির্বাচনে ১৪ দল ঐক্যবদ্ধভাবে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা মার্কা নিয়ে অংশ নেয়। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় হওয়ায় জোটগত হয়নি।
এবারের প্রেক্ষাপটে স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও জোট হতে পারে বলে মনে করছেন ১৪ দলীয় শরিক দলের নেতারা। তারা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে জোটগত নির্বাচনেও আগ্রহী।
তবে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের একাধিক সূত্র জানায়, এ নির্বাচনের পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। বিশেষ করে প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি নেবে না সেটাই হবে প্রধান বিবেচ্য বিষয়।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বেসরকারি বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বাংলানিউজকে বলেন, এখনও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমরা দলীয়ভাবে প্রস্তুতি নেবো। জোটগত হলে জোটগতভাবে করবো। এটা নিয়ে জোটে আলোচনা হবে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শরিফ নুরুল আম্বিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দলীয়ভাবে সামর্থ্য অনুসারে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে আওয়ামী লীগের জোটের প্রধান শরিক। তারা যদি চায় তাহলে আমরা জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেবো।
ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক বলেন, জোট আছে, জোটগতভাবে হলে ভালো হয়। কিন্তু সেটা নির্ভর করবে আওয়ামী লীগের ওপর। আওয়ামী লীগ চাইলে জোটগতভাবে হবে। তা না হলে আমরা দলীয়ভাবে করার প্রস্তুতি নেবো।
গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নুরুর রহমান সেলিনম বলেন, বিষয়টি পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। জোটগত নির্বাচন হতে পারে। সেটা না হলে আমরা দলীয়ভাবেই অংশ নেবো। আমরা পার্টিতে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবো। আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটাও দেখার বিষয় আছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, আগামী মাসে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সভায় স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিশেষ করে আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য পৌরসভা নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, এ বিষয়ে আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আমরা কি করবো সেটা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জোটের শরিকদের সঙ্গেও আলোচনা হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কোথাও কোথাও জোটের শরিকদের জনপ্রিয় প্রার্থী আছেন। আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সেখানে সমঝোতা হতে পারে। তবে কি হবে সেটা দলীয় সিদ্ধান্তের পর বলা যাবে।