ভূমিকম্পের পরও রক্ষা নেই, বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমার

Slider সারাবিশ্ব


মিয়ানমারে সৃষ্ট ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা ১৬০০ ছাড়িয়ে গেছে। এই ঘটনায় ২০২১ সাল থেকে মিয়ানমার শাসন করা সামরিক জান্তা দেশটির ৬টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।

পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবিলায় জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু বিধ্বংসী এই ভূমিকম্পের পরও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে মিয়ানমারের জান্তা। এসব হামলার সমালোচনাও করেছে জাতিসংঘ।

শনিবার (২৯ মার্চ) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির কিছু অংশে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পরও বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। জাতিসংঘ এই হামলাগুলোকে “সম্পূর্ণরূপে জঘন্য এবং অগ্রহণযোগ্য” বলে বর্ণনা করেছে।

জাতিসংঘের স্পেশাল র‌্যাপোটিয়ার টম অ্যান্ড্রুজ বিবিসিকে বলেন, ভূমিকম্পের পর সবাই যখন “মানুষকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন তখন সেনাবাহিনী মানুষের ওপর বোমা নিক্ষেপ” অব্যাহত রেখেছে, এটা “অবিশ্বাস্যের চেয়ে কম কিছু নয়”।

তিনি প্রায় চার বছর আগে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক সরকারের প্রতি সকল ধরনের সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “যাদের সামরিক বাহিনীর ওপর প্রভাব আছে তাদের উচিত তাদের ওপর চাপ বৃদ্ধি করা এবং স্পষ্ট করে বলা উচিত যে— এটি গ্রহণযোগ্য নয়।”

তিনি আরও বলেন, “আমি জান্তাকে তাদের যেকোনও সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।”

বিবিসি বার্মিজ নিশ্চিত করেছে, উত্তরাঞ্চলীয় শান প্রদেশের নাউংচোতে বিমান হামলায় সাতজন নিহত হয়েছেন। ভূমিকম্প আঘাত হানার তিন ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ওই হামলা চালানো হয়।

ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলের চাং-ইউ শহরে যে গণতন্ত্রপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য লড়াই করছে, তারা বিমান হামলার খবর জানিয়েছে। থাই সীমান্তের কাছাকাছি অঞ্চলগুলোতেও বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে।

ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক প্রশাসনের প্রতিনিধিত্বকারী জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রোববার থেকে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় “প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ ব্যতীত আক্রমণাত্মক সামরিক অভিযানে” দুই সপ্তাহের জন্য বিরতি শুরু করবে তাদের সশস্ত্র বাহিনী।

সাগাইংয়ে আঘাত হানা ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প প্রতিবেশী দেশগুলোতেও অনুভূত হয়েছিল। এরপর মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় এবং রাজধানী নেপিদোতেও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অনেক অবকাঠামো।

জান্তা জানিয়েছে, বিধ্বংসী এই কম্পনে ১,৬৪৪ জন মারা গেছেন এবং আরও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *