আন্দোলনে বাধা দিলে পাল্টা আক্রমন: খালেদা জিয়া

Slider জাতীয় টপ নিউজ রাজনীতি সারাবিশ্ব

54816_04
গ্রাম বাংলা ডেস্ক: পুলিশ ও গুলি দিয়ে আন্দোলন ঠেকানোর চেষ্টা হলে এর পরিণত শুভ হবে না,পাল্টা আক্রমন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আন্দোলনে বাধা দেয়া হলে রাজপথে এর পাল্টা জবাব দেয়া হবে। একইসাথে ঈদের পর আন্দোলন জোরালো করতে ঢাকা মহানগর বিএনপির নতুন আহবায়ক কমিটি অতিদ্রুত ঘোষণা করার কথাও জানান বিএনপির চেয়ারপারসন।
বুধবার মহানগর বিএনপির এক ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসন এ কথা বলেন। জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি ভবন প্রাঙ্গনে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে মহানগরের ওয়ার্ড পর্যায়ের ১৫ হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন বলে জানানো হয়।
বেগম খালেদা জিয়া বলেন, দেশের মানুষ এই সরকারকে হটাতে আন্দোলনের আজ জন্য ঐক্যবদ্ধ। আন্দোলন মানে মারপিট, জ্বালাও-পোড়াও নয়। ঈদের পরে আমাদের আন্দোলন হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক।
তিনি বলেন, আমরা শুনতে পারছি, ঈদের পর আওয়ামী লীগও পাল্টা রাজপথে নামবে। আমি স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, আপনারা রাজপথে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভালো। তবে পুলিশ ও গুন্ডাবাহিনী নিয়ে অস্ত্র হাতে রাজপথে নামবেন না। এটা করা হলে পাল্টা জবাব দেয়া হবে। এর পরিণতি ভালো হবে না।
৫ জানুয়ারি ভোট বর্জনের আন্দোলনে রাজধানীতে মহানগর কমিটির কার্যক্রমে অসন্তোষ প্রকাশ করে খালেদা জিয়া বলেন, সারা দেশে ব্যাপক আন্দোল হয়েছে। ঢাকায় আন্দোলনের কিছু ক্রটি ছিলো, এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তাই ঢাকা মহানগরের নতুন আহবায়ক কমিটি অতিদ্রুত দেয়া হবে। ওই আহবায়ক কমিটি ইউনিট ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, সর্বত্র খুন-খারামি হচ্ছে। মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন চলছে। আর ঘুরাঘুরি না করে সবাই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সরকারকে বলতে চাই, এভাবে নির্যাতন চলতে থাকলে আমরা চুপ করে ঘরে বসে থাকবো না।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দেশে জিসিনপত্রের দাম আকাশচুম্বি। দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নেই। রাস্তা-ঘাটের বেহাল অবস্থা। গাড়ি চলতে পারে না। ঈদের সময় রাস্তার আরো বেহাল অবস্থা হয়। অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের এই অবস্থার পরিবর্তন আসবে না। তাই এই সরকারকে হটাতে হবে।
আগামীতে নতুন ধারার রাজনীতির শুরু করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে সাবেক এই প্রধান মন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়ন ঘটাতে হলে নতুন ধারার রাজনীতি করতে হবে। নিজের স্বার্থ বাদ দিয়ে সব ভেদাভেদ ভুলে দেশের কল্যাণে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশে অনেক শিক্ষিত যুব সমাজ আজ বেকার হয়ে আছে। তাদের কাজে লাগাতে হবে। তাই সবাইকে বলব, ঈদের পর আমাদের অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে হবে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে এই সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, এ সরকার আলোচনা চায় না। কিয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চায়। আমি স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, এভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে আপনাদের পরিণতি হবে এমন যে তখন কেউ চোখের পানিও ফেলবে না। বরং দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করবে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান অভিহিত করে একে নতুনভাবে পূর্ণগঠন ছাড়া দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
ইফতারের আগে দেশের কল্যাণ ও যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাদেক হোসেন খোকার আশু আরোগ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
খালেদা জিয়ার সাথে এক টেবিলে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মহানগর সদস্য সচিব আবদুস সালাম, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক পিয়াস করীম, চেয়াপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, গাজীপুর সিটি মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান, রাজশাহীর মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল প্রমুখ।
বিএনপি নেতা শাহজাহান ওমর, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, হায়দার আলী, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মুশফিকুর রহমান, মাহমুদুল হাসান, রুহুল আলম চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু, সালাহউদ্দিন আহমেদ, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, অঙ্গসংগঠনের মধ্যে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, নুরে আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, শ্যামা ওবায়েদ, মহানগরের যুগ্ম আহবায়ক কাজী আবুল বাশার, এস এ খালেক, এম এ কাইয়ুম, মো. সাহাবুদ্দিন, মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আখতার কল্পনা, চেয়ারাপারসনের মিডিয়া উইংরে সদস্য শায়রুল কবীর খান প্রমুখ নেতারা ইফতারে ছিলেন।
২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, জামায়াতে ইসলামীর মাওলানা আবদুল হালিম, লেবার পার্টির মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামিক পার্টির আবদুল মোবিন, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জমান খান, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, জাগপার খোন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, এনপিপি’র ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিজেপির সালাহউদ্দিন মতিন প্রকাশ, ন্যাপ ভাসানী আজহারুল ইসলাম. সাম্যবাদী দলের সাইদ আহমেদ, ডিএল‘র সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, কল্যাণ পার্টির এম এম আমিনুর রহমান ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *