গরমের তীব্রতা কাটতে না কাটতেই শুরু হয়ে গেছে শীতের আমেজ। স্বস্তি পেতে এখনো ফ্যান বা এসির বাতাসে বসতে হয়। অথচ এই সময়টাতে ত্বকের শুষ্কতা বেশি অনুভূত হয়। অনেকে বিষয়টি একদমই পাত্তা দিতে চান না। ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে থাকে না কোনো সুষ্ঠ ব্যবস্থা। এই সুযোগে ত্বকে শুরু হয় সুক্ষ্ম ফাটল। এক সময় তা বড় আকার ধারণ করলে চোখে পড়ে। বিশেষ করে পায়ের গোড়ালির চামড়া ক্ষতিগ্রস্থ হয় বেশি। হাতের কনুই রুক্ষ্ম, নখের চারপাশের চামড়া ওঠা, হাতের তালুর চামড়ায় খসখসে ভাব চলে আসে। মুখের সুন্দর ত্বক শুষ্ক ও মলিন হয়ে পড়ে। এতে ব্রণের উপদ্রবও বেড়ে যায়। ফলে নিজের চিন্তা ধারায় একটা অস্বস্তি বা উদাসীনতা চলে আসে। অপর দিকে ঝরঝরে মসৃণ ত্বক আপনাকে সুন্দর করে তোলে আবার কর্মজীবনেও ফিরিয়ে দেয় উদ্যামতা। তাই জেনে নিন শীতের শুরুতে কীভাবে যত্ন নিলে ত্বক থাকবে সুস্থ, সুন্দর আর কোমল।
এ সময় হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পারেন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী গ্লিসারিন সাবান ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম দিতে হবে। তবে অনেকের সমস্যা হল, ত্বক শুষ্ক থাকে অথচ ক্রিম দিলে তা দ্রুত ঘেমে যায়। তাই খুব বেশি তৈলাক্ত ক্রিম ব্যবহার না করে মাঝারি তৈলাক্ত ক্রিম খুব অল্প পরিমানে ব্যবহার করতে পারেন। তারপরও যদি ঘেমে ওঠে, উদ্বিগ্ন না হয়ে টিস্যু দিয়ে চেপে চেপে ঘাম মুছে নিলে পুরো দিনের জন্য ফ্রেশ। এসময় ঋতু উপযোগী সানস্ক্রিন (এসপিএফ ৪০ এর উপরে) ব্যবহার করা সবচেয়ে নিরাপদ।
ত্বকের বিড়ম্বনার সঙ্গে পা ফাটার ঝামেলাও কম নয়। ফাটা ত্বকে ভ্যাসলিন বা গ্লিসারিনের সঙ্গে সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে হাত ও পায়ের গোড়ালিতে মাখুন। বিশেষভাবে রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করা সবচেয়ে কার্যকরী। সকালে ঘুম থেকে উঠে বিছানা থেকে নামার আগেও পায়ের গোড়ালিতে পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে এক মিনিট ম্যাসাজ করে নিন। হাতের তালুতেও কিছুটা ম্যাসাজ করে নিতে হবে। মাঝে মাঝে গোসলের সময় স্ক্রাবার দিয়ে ঘষে মরা চামড়া তুলে নিলেই আপনি পুরো শীত জুড়েই নিরাপদ। পা ফাটার সঙ্গে হাতের তালুর খসখসে হওয়ার ঝামেলায় পড়তে হবে না।
ঠোঁট নিয়মিত পরিষ্কার করে ভ্যাসলিন ব্যবহার করতে পারেন। এ সময় ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার না করে গ্লসি ধরনের লিপস্টিক ব্যবহার করতে পারেন। বার বার জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিস্তার মেলে না আবার ফেটেও যায় দ্রুত। তাই এগুলো ব্যবহার করাই ভালো।
অলিভ অয়েল ত্বকের যত্নে খুবই উপকারী। দিনে একবার অন্তত ব্যবহার করুন। তবে অবশ্যই তা রাতে, কারণ দিনের আলোতে ত্বকের বর্ণ কিছুটা কালচে হয়ে যায়। বডি লোশনও ব্যবহার করা যেতে পারে।
শুষ্কতার এ সময়ে মাসে দুইবার মেনিকিউর, পেডিকিউর ও একবার ফেসিয়াল করা প্রয়োজন। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করে নিয়মিত সুষম খাদ্য, প্রচুর শাক-সবজি ও ফলমূল খেতে হবে। এসব খাবার ত্বকের পুষ্টি যোগাবে ভেতর থেকেই। এলার্জি, একজিমা জাতীয় ত্বকের রোগ থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।