বিএনপি নেতার নেতৃত্বে গভীর রাতে শ্মশানের মাটি বিক্রি

Slider বাংলার মুখোমুখি

রমজান আলী রুবেল, শ্রীপুর(গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে গভীররাতে শ্মশানের মাটিকেটে বিক্রি অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে। মাটিকাটার খবর পেয়ে গভীররাতেই বিএনপির নেতা ডাম্পট্রাক এক্সকাভেটর আটক করে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। শ্মশানের মাটিকেটে নেয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা। হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের তোপের মুখে শ্মশানের মাটি মাটি ভরাট করে দিয়েছে স্থানীয় বিএনপি।

শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার কাওরাইদ শ্মশান ঘাটের মাটিকেটে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে।

অভিযুক্ত বিএনপির নেতা আব্দুল্লা ফকির উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের বেলদিয়া গ্রামের মৃত জব্বার ফকিরের ছেলে। তিনি কাওরাইদ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

সুদিব চন্দ্র রায় বলেন, শ্মশানে আমাদের পার্ব পুরুষের রক্ত রস মিছে রয়েছে। এটি আমাদের আবেগের জায়গা। এখানে আমাদের নাড়ীপুতা রয়েছে। এখানে কি করে আঘাত করলো। প্রয়োজনে আপনি আমাদের বাসাবাড়ি কেটে নেন। শ্মশানঘাটের মাটি কেন কাটলেন? আমাদের

শ্মশানের পাশের মাটি কেটে নিলো শ্মশান বিলিন হয়ে নদীতে মিশে যাবে। তিনি আরও জানান, বিষয়টি গণমাধ্যমে না জানতে নিষেধ করেছেন স্থানীয় করেকজন।

তমাল ক্লান্তি দেবনাথ বলেন, গভীররাতে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারি আমাদের শ্মশানের কাছ থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর কয়েকজনকে ফোন করে শ্মশানঘাটে ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি বিএনপির নেতা আব্দুলল্লাহ্ ফকির দাড়িয়ে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটিকেটে ডাম্পট্রাকে ভর্তি করে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর আমরা প্রথমে বাধা দিলেও বিএনপির নেতা বাধা উপেক্ষা করে মাটিকাটা চালিয়ে যায়। পরবর্তীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে জানালে মুহুর্তেই কয়েক শতাধিক লোকজন জরিত হয় শ্মশানঘাটে। এসময় বিএনপির নেতাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়া হয়। তিনি আরোও বলেন, বিএনপির নেতা এই বলে হুমকি দেয় আমরা সরকারি কাজে বাধা দিচ্ছি। তিনি নদীর মাটি কাটছেন।

কনক কান্তি দেবনাথ৷ শ্মশানঘাটের মাটি কাটার খবর পেয়ে মুহুর্তে আমাদের ছেলেরা সেখানে চলে যায়। বিএনপির নেতাকে আটক করে। আটক করা হয় ডাম্পট্রাক ও এক্সকাভেটর। এরপর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এসে অভিযুক্ত বিএনপির নেতাকে নিয়ে যায়।

কাওরাইদ শ্মশানঘাটের সভাপতি বাবুল শাহ্ বলেন, আমরা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মুসলমানদের সঙ্গে মিলেমিশে চলে আসছি বহুবছর যাবৎ। আমরা একে অপরের সুখ দুঃখে পাশে দাঁড়াই। আমাদের আবেগের জায়গা হলো শ্মশানঘাট। দেশে কি আর কোথাও মাটি নেই। এত অভাব পড়লো মাটির যে

শ্মশানঘাটেও ছাড় পেলো না। তিনি আরও জানাম, আমাদের প্রতিবাদের মুখে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা শ্মশানঘাটে পূনরায় মাটি ভরাট করে দিছে। এমন কর্মকাণ্ডের কারণে নেতার বিরুদ্ধে সংগঠন ব্যবস্থা নিবো বলে জানিয়েছেন বিএনপি।

অভিযুক্ত বিএনপির আব্দুল্লাহ ফকিরের ব্যক্তিগত নাম্বারে পরপর কয়েকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

কাওরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এমদাদ হোসেন মন্ডল বলেন, খবর সাথে সাথে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে শ্মশানঘাটের মাটি ভরাট করে দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

শ্রীপুর থানার সহকারী উপপরিদর্শক এএসআই কামরুজ্জামান বলেন, ৯৯৯ ফোন পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে যায়। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *