দেশে মুক্তবুদ্ধি ও স্বাধীন চিন্তার কোন অবকাশ  নেই মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, দেশে এক দুঃসময় চলছে। এখন স্বাধীন চিন্তা ও মুক্তবুদ্ধির চর্চার কোন অবকাশ নেই। এখন কণ্ঠ  রোধ করা হয়, চিন্তাকে বাধা দেয়া হয়। মুক্তবুদ্ধির চর্চাকে পেছনে  ফেলে দেয়া হয়। বিকালে রাজধানীর কমলাপুরের কবি জসিমউদ্দীন সড়কে মরহুমের নিজ বাসভবনে বাসায় প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলামের ৭৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। মির্জা আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে দুঃসময় চলছে। সেজন্য হতাশ হওয়ার কারণ  নেই। নিঃসন্দেহে একদিন আমরা সফল হবো। এদেশের মানুষ স্বাধীন চিন্তা ও মুক্ত বুদ্ধির পরিবেশ ফিরে পাবে। চাষী নজরুলকে স্বাধীন চিন্তা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চাকারী আখ্যা দিয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, তিনি সব সময় স্বাধীন চিন্তা করতেন। তার সহকর্মীরাও  সেই কাজ করতেন এবং মুক্তবুদ্ধি চর্চার একটি বাংলাদেশের স্বপ্নও  দেখতেন তিনি। কিন্তু আজকে দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা যারা ১৯৭১ সালের আগে থেকেই সুন্দর একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন  দেখছিলাম, তার জন্য একাত্তরে লড়াই করেছিলাম, দীর্ঘদিন পরে এসে আজকে শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়, কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে যায়। আমরা যারা সত্য কথা বলতে চাই, যারা ভিন্নমত পোষণ করতে চাই, তাদেরকে এখানে পুরোপুরিভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন-দমনের শিকার হতে হয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, অত্যন্ত বড়মাপের সৃজনশীল মানুষ ছিলেন চাষী নজরুল। এই মহান সৃষ্টিশীল মানুষটিকে আমাদের বারবার স্মরণ করা উচিত। শুধু এটা স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য, আমরা হেরে যাইনি। আমরা আমাদের মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করছি, লড়াই করতে থাকবো। আসুন আমরা সবাই মিলে চাষী ভাই যে কাজ সমাপ্ত করতে পারেননি, সেই কাজ সমাপ্ত করার জন্য আমরা অবদান রাখি। প্রখ্যাত চলচিত্রকার আমজাদ  হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মরহুম চাষী নজরুল ইসলামের কর্মজীবনের ওপর বক্তব্য রাখেন চলচ্চিত্রকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক তারেক শামসুর  রেহমান, ড্যাব মহাসচিব অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, ছড়াকার আবু সালেহ, মরহুম চাষী নজরুলের সহধর্মিণী জ্যোৎস্না কাজী, জাসাস সভাপতি এমএ মালেক, কণ্ঠশিল্পী হাসান চৌধুরী, চিত্রনায়ক হেলাল খান, চিত্রনায়ক মরহুম মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না, চিত্র পরিচালক নাসিরউদ্দিন মিলনও বক্তব্য রাখেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, চলচ্চিত্র পরিচালক সাজেদুর রহমান সাজু, মহারাজ তালুকদার, নাসিরউদ্দিন মিলন, সাইমন তারিক, কাজী আলমগীর, হান্নান মজুমদার, আবু বকর সিদ্দিকী বাবু, এস আল মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার সমষপুর গ্রামে ‘একুশের বাড়ি’তে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, জাতীয়তাবাদী চলচ্চিত্র পরিষদ, গণসংস্কৃতি দল, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মরহুম চলচ্চিত্রকারের কবরে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।