বিশ্ব ইজতেমায় বৃহত্তম জুমার জামাত অনুষ্ঠিত

Slider জাতীয়

গাজীপুর: ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে অনুষ্ঠিত হল বিশ্বের সবচেয়ে বড় জুমার জামাত। এই জুমার নামাজে ইমামতি করেন তাবলীগ জামাত বাংলাদেশের শুরায়ে নেজামের শীর্ষ মুরুব্বী মাওলানা জুবায়ের। মোনাজাতে মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা করা হয়।

আজ শুক্রবার (৩১ জানুয়ারী) বেলা টা থেকে টা পর্যন্ত নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে অনুষ্ঠিত হয় মোনাজাত।

ইজতেমা ময়দানে আযান হয় ১ টা ৪১ মিনিটে। জুমার নামাজে খুতবা পাঠ শুরু হয় দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে, শেষ হয় ১ টা ৪৯ মিনিটে। দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে জুমার জামাত শুরু হয়ে শেষ হয় ১টা ৫৬ মিনিটে। রবিবার আখেরি মুনাজাতও তিনিই পরিচালনা করবেন বলে জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লা রায়হান। জুমার নামাজের পর ইজতেমা ময়দানে মৃত্যু বরণ করা এক মুসল্লির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

রাজধানী ঢাকার উপকন্ঠ টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে তাবলীগ জামাতের বার্ষিক মহাসম্মেলন বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত জুমার নামাজে শরীক হয়েছেন লাখো মুসল্লি। ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের সাথে ইজতেমা ময়দানেের আশপাশ এলাকা থেকে হাজার হাজার মুসলমান জুমার জামাতে শরীক হতে আসেন। জুমার নামাজ শেষে আগত মুসল্লিরা বাড়ি ফিরে যান। জুমার জামাতে শরীক হতে রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার হাজার হাজার মানুষ রেলপথ, সড়ক পথ, নৌপথসহ বিভিন্ন যানবাহন এবং অনেকে পায়ে হেঁটে নানা ঝক্কি-ঝামেলা পেরিয়ে শরীক হন এই বৃহত্তম জুমার জামাতে। বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশের সহস্রাধিক প্রতিনিধিসহ লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে অসীম, অনন্ত ও প্রেমময় আল্লাহ’র সন্তুষ্টি অর্জনে ইবাদত বন্দেগি আর কোরআন হাদিসের আলোচনায় এখন বিশ্ব ইজতেমার বিশাল প্যান্ডেলে পবিত্র ধর্মীয় আবহাওয়া বিরাজ করছে। রবিবার আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ ধর্মীয় সমাবেশের আলমী শূরার তত্ত্বাবধানে মাওলানা জুবায়ের অনুসারিদের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দফার প্রথম ধাপ শেষ হবে।

এদিকে সকাল থেকেই সর্বস্তরের মুসলমানরা জুমার জামাতে শামিল হওয়ার জন্য টুপি, পাঞ্জাবী পরে জায়নামাজ হাতে আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ইজতেমা ময়দানের দিকে ছুটতে দেখা গেছে। দেশ বিদেশের মুসল্লির সাথে একই জামাতে শরীক হয়ে নামাজ আদায় করার মাধ্যমে বেশি সাওয়াব হাসিলের উদ্দেশ্যে সকলের মধ্যে দেখা গেছে ব্যাকুলতা। যতই সময় গড়াতে থাকে ততই মুসল্লিদের ঢল আঁচড়ে পড়ে তুরাগের তীরে। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের সমাবেশ ঘটে জুমার জামাতে। টঙ্গী, উত্তরা, কামারপাড়া, মিরপুর, আব্দুল্লাহপুরসহ আশপাশের এলাকার মসজিদে জুমার জামাতে মুসল্লির সংখ্যা কম ছিল। ইজতেমা মাঠে জুমার জামাত সুবিশাল প্যান্ডেলের গন্ডি ছাড়িয়ে বিস্তৃতি লাভ করে চার পাশে। সকাল থেকেই মাঠ উপচে আশপাশের খোলা জায়গাসহ সব স্থান পরিণত হয় জনসমুদ্রে। মাঠে স্থান না পেয়ে অনেকে মহাসড়ক ও অলি-গলিসহ যে যেখানে পেরেছেন পাটি, চটের বস্তা, খবরের কাগজ বিছিয়ে জুমার নামাজে শরিক হয়েছেন। ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বেশ কিছুক্ষণের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

টঙ্গী এখন টুপি-পাঞ্জাবীর নগরী: বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে দেশ-বিদেশ থেকে মুসল্লিদের টঙ্গী মুখি স্রোত অব্যাহত রয়েছে। প্রত্যেকের মাথায় টুপি ও পাঞ্জাবি। সর্বত্র একই পোশাক হওয়ায় টঙ্গীর নগরী এখন টুপি পাঞ্জাবি নগরী। বহুল কাঙ্খিত আখেরী মোনাজাত পর্যন্ত এ স্রোত আরো প্রবল হবে। তুরাগ তীরবর্তী বিশাল প্রান্তরে নির্মিত পাটের চট ও লাইলন কাপড়ের প্যান্ডেল ইতোমধ্যেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। ফলে নতুন করে যারা আসছেন তাদেরকে নিজ উদ্যোগে তাবু টানিয়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিতে হচ্ছে।

শুক্রবার বাদ ফজর পাকিস্থানের মাওলানা জিয়াউল হকের আ’ম বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব ভারতের মাওলান ইব্রাহিম দেওলার বয়ানের মাধ্যমে অনানুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয় ইজতেমা। শুক্রবার বাদ জুমা বয়ান করেন জর্ডানের মাওলানা শেখ উমর খাতিব । বাদ আসর বয়ান করবেন মাওলানা জুবায়ের। বাদ মাগরিব বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা আহমেদ লাট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *