কে এই নতুন আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার

Slider বাংলার মুখোমুখি

বাংলাদেশ পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাহারুল আলম। একই সঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নতুন কমিশনার পদে শেখ মো. সাজ্জাত আলীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২০ নভেম্বর) তাদের দুজনকে নতুন দায়িত্ব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেন উপসচিব আবুল হায়াত মো. রফিক।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বাহারুল আলমকে অন্য যে কোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধাসরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছর মেয়াদে আইজিপি পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।

আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী প্রাক্তন অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (চলতি দায়িত্ব) শেখ মো. সাজ্জাত আলীকে অন্য যে কোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধাসরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছর মেয়াদে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পুলিশ কমিশনার পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।

বাহারুল আলম ২০০৭-০৮ সালে এসবি প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। পরে পুলিশ সদর দপ্তরে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ সদরদপ্তরের শান্তিরক্ষা বিভাগে পুলিশ লিয়াজোঁ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৫ সালে আফগানিস্তানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সিনিয়র পুলিশ অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করেন। এর আগে ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া, কসোভো ও সিয়েরা লিওনে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

দুই দফা পদোন্নতিবঞ্চিত বাহারুল আলম ২০২০ সালে অবসরে যান।

অন্যদিকে, শেখ মো. সাজ্জাত আলী বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে ১৯৮৪ সালে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি একসময় ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ছিলেন। তা ছাড়া সাজ্জাত আলী লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন।

চাকরি জীবনে তিনি চট্টগ্রাম ও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ছিলেন। এ ছাড়া হাইওয়ে পুলিশ গঠন হলে সেখানে ডিআইজির দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পুলিশ সদরদপ্তরে কর্মরত ছিলেন। মেধাবী, কর্মঠ ও সৎ পুলিশ অফিসার হিসেবে বাহিনীতে সুনাম রয়েছে সাজ্জাত আলীর। পুলিশের এই কর্মকর্তার বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপায়।

গত ১৭ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের (পুলিশ-১ শাখা) সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে শেখ মো. সাজ্জাত আলীকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১ এর মামলা নম্বর ৩৩/২০১৭ এর ৩ সেপ্টেম্বরের রায় অনুযায়ী সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি (চলতি দায়িত্ব) শেখ সাজ্জাদ আলীকে ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ভূতাপেক্ষভাবে চাকরিতে পুনর্বহাল হিসেবে গণ্য করা হলো। তিনি আদালতের আদেশ অনুযায়ী সব প্রাপ্য বেতন-ভাতাদি এবং অবসরজনিত আর্থিক সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অনেককেই সরিয়ে দেওয়া হয়। তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বর্তমানে কারাবন্দি। অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার বেশিরভাগ কর্মকর্তাকেই চাকরি থেকে অবসরে পাঠানো হয়েছে।

সরকার পতনের পরপরই মো. ময়নুল ইসলামকে আইজিপি নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তখন নতুন ডিএমপি কমিশনার করা হয়েছিল মাইনুল হোসেনকে। এবার পুলিশপ্রধানের পাশাপাশি ডিএমপি কমিশনার পদেও পরিবর্তন আনা হলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *