গরু মৃত্যুর জের, ভারতে আরেক মুসলিম যুবককে হত্যা  

Slider টপ নিউজ সারাদেশ

97538_Untitled-2

 

 

 

 

তৃতীয় বলি…। গো-মাংস নিষিদ্ধ ঘোষণা করার জেরে এই নিয়ে তৃতীয় জনের মৃত্যু হল দেশে।

৯ অক্টোবরের ঘটনা। উধমপুরের চেনানি গ্রামের রাস্তায় তিনটি গরুর মৃতদেহ দেখতে পাওয়া যায়। তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিষাক্ত কোনও কিছু খেয়ে মারা গিয়েছিল গরুগুলি। কিন্তু গো-হত্যা করা হয়েছে সন্দেহে বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায় উধমপুরে। ইতিমধ্যে জম্মু-কাশ্মীরের এক নির্দল বিধায়ক ইঞ্জিনিয়ার রশিদের বিফ-পার্টি নিয়েও ক্ষোভ জমা হয়েছিল দক্ষিণপন্থীদের মধ্যে। ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমে পড়ে তারা। রাস্তার ধারে দাঁড় করানো ছিল একটি ট্রাক। সেটিকে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা ছোড়ে বিক্ষোভকারীরা। গুরুতর জখম হন বছর পঁয়ত্রিশের ট্রাকচালক শওকত আহমেদ দার ও ২৩ বছর বয়সি জাহিদ রাসুল বাট। ৭০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় সফদরজঙ্গের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন জাহিদ। আজ সেখানেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

খবর ছড়িয়ে পড়ে দাবানলের মতো। জাহিদ ও শওকত, দু’জনেই দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগের বাসিন্দা। অনন্তনাগের রাস্তায় নেমে পড়েন বিক্ষুব্ধ লোকজন। জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। টায়ার পোড়াতে শুরু করেন। কাশ্মীরকে দেশের সঙ্গে জুড়ে রেখেছে ওই একটি রাস্তা। গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কাশ্মীর। শেষে পরিস্থিতি সামলাতে রাস্তায় নামে সেনা-পুলিশ। বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে। পাল্টা জবাব দেয় পুলিশও। কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়তে থাকে তারা।

উত্তরপ্রদেশের দাদরি, হিমাচলের সিরমৌর, মধ্যপ্রদেশের সিহোরা, কাশ্মীরের অনন্তনাগ…। প্রতি দিনই খবরে উঠে আসছে দেশের কোনও না কোনও প্রান্তের নাম। কারণ সেই একটাই, গো-হত্যা ও গো-মাংস বিক্রি নিষিদ্ধকরণ। আজ এ নিয়ে সরাসরি মোদী সরকারকে আক্রমণ করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘গো-মাংস নিষিদ্ধ করার নামে আর একটা অর্থহীন মৃত্যু। যার জন্য বিজেপি ও তার শরিক দলগুলোই সম্পূর্ণ দায়ী। আর এ বার রাজ্য সরকার জাহিদের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলবে।’’ ওমর আরও লেখেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী তো দাদরির ঘটনা নিয়েও অখিলেশ যাদব আর উত্তরপ্রদেশ সরকারের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে হাত তুলে নিয়েছে।’’

২৮ সেপ্টেম্বর গো-মাংস খেয়েছেন সন্দেহে মহম্মদ আখলাক নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে। এর বেশ কিছু দিন পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, ‘‘কেন্দ্রের কী করার আছে এতে?’’ প্রথম থেকেই গোটা বিষয়টি এড়িয়ে চলতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। সে জন্য বারবার বিরোধীদের আক্রমণের মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে। এমনকী শিরোমণি অকালি দলের মতো শরিক দলগুলোও সরব হয়েছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। কিন্তু বিজেপি তাতে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে, সব বিষয়ে কৈফিয়ত দিতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে? আগে ক’জন প্রধানমন্ত্রী এমন কাজ করেছেন?

আগামিকাল কাশ্মীর স্তব্ধ করে দেওয়ার ডাক দিয়েছেন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি। তাঁকে সমর্থন জানিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মিরওয়াইজ উমর ফারুক ও জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের নেতা ইয়াসিন মালিক।

সুত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *