মাসুদ রানা সরকার, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি ঃ- বগুড়া জেলার “শেরপুরে” ডেঙ্গু-জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এবং ভর্তি আছেন ৭জন। শুক্রবার, ০৮নভেম্বর/২৪, পর্যন্ত ৫৩ জন রোগীর সন্ধান মিলেছে এর মধ্যে শেরপুর থানা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭ জন। এছাড়া ৪৬ জনই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য একজনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি এই উপজেলায় ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশার অস্তিত্ব মিলেছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মশার উপদ্রবে উপজেলাবাসীর জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বাসা-বাড়ি থেকে অফিস আদালত সব জায়গায় মশা বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের অবস্থা একেবারেই নাজেহাল। শুধু সন্ধ্যায় বা রাতে নয়, দিনের বেলায়ও মশার উৎপাত চলছে সমান তালে। এরসঙ্গে এই উপজেলায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আক্রান্ত মধ্যে মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও শঙ্কায় রয়েছেন রোগীর স্বজনরা। সেইসঙ্গে স্কুল-মাদ্রাসা ও কিন্ডারগার্টেনে পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকরা।সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পৌরসভাসহ উপজেলার দশটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন, নালা-নর্দমায় মশার লার্ভা কিলবিল করছে। এসব স্থান যেন এডিস মশার প্রজননস্থল হয়ে উঠেছে। এসময় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। মশারি, কয়েল ও ইলেকট্রিক ব্যাট ব্যবহার করেও এই প্রাণঘাতী পতঙ্গের কামড় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারছি না। মশার উৎপাত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গৃহিণী সাথী আক্তার বলেন, মশার কারণে রাতে বাসায় সন্তানদের লেখাপড়া করাতে ঝামেলায় পড়ি। আর দিনের বেলার বিড়ম্বনা হলো রাস্তায় ফেলে রাখা বর্জ্যরে উৎকট গন্ধ। পৌরসভার কোন কোনো ডাস্টবিনের এমন অবস্থা যে সেটা যেন এডির মশার আবাস্থল হয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, মশার কামড়ে মানুষ অ্যানোফিলিস, ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়। এদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। এজন্য সকলকে সচেতন থাকা প্রয়োজন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, সারাদেশের ন্যায় এই উপজেলায় ডেঙ্গু জ¦রে আক্তান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শুক্রবার ৮নভেম্বর পর্যন্ত এই উপজেলায় ৫৩জন ব্যক্তি ডেঙ্গু জ¦রে আক্তান্ত হয়েছেন। এই রোগীগুলোর সবাইকে আমরা আমাদের হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দিয়েছি। তবে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ায় শজিমেক হাসপতালে পাঠানো হয়েছে। আর সাতজন রোগী বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিরা সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তিনি আরো বলেন, এই উপজেলায় এডিস মশার অস্তিত্ব মিলেছে। তাই সবার মাঝে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বাড়িঘর ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বলেন। পাশাপাশি ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশা থেকে রক্ষা পেতে মশারি টানিয়ে ঘুমানোর পরামর্শ দেন তিনি