সাফ চ্যাম্পিয়নদের বরণ করতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ঘন্টা দুই অপেক্ষায় ছিলেন বাফুফে ভবনে। সন্ধ্যা সাতটায় সাবিনারা ভবনে পৌছানোর পর সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সেই সময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক কোটি টাকা আর্থিক পুরস্কারের ডামি চেক প্রদান করেন।
আধ ঘন্টার কম সময় নারী ফুটবলারদের সঙ্গে সভার পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন ক্রীড়া উপদেষ্টা। বাফুফে ভবনের নিচে তখন সাংবাদিকদের হুলুস্থল পরিস্থিতি। প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের চেয়ে ইউটিবারের সংখ্যা বেশি। বাফুফের মিডিয়া বিভাগ তাদের সামলাতে হিমশীম। এক পর্যায়ে সম্মেলন স্থগিত অবস্থায় গেলেও পুলিশের পদক্ষেপে খানিকটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নারীদের এক কোটি টাকা প্রদান করা হচ্ছে। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা নারী দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে শনিবার। আমরা নারী ফুটবলের উন্নয়নের সঙ্গী হিসেবে রয়েছি।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ইতোমধ্যে ২০ লাখ টাকা বোনাস ঘোষণা করেছে। ক্রিকেট বোর্ডের এই ঘোষণাকে অত্যন্ত সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা চাই ফুটবল-ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকুক। ক্রিকেট বোর্ডের এই পুরস্কার ঘোষণা ইতিবাচক দিক। আগে শুনেছি ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে মন্ত্রণালয়-এনএসসি, বিসিবির সম্পর্ক সাপেনেউলে। এখন অবশ্য সেই রকম নেই। আমরা চাই ফুটবল-ক্রিকেট সুন্দর সম্পর্কের মাধ্যমে সুন্দর ক্রীড়া পরিবেশ।’
বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা অত্যন্ত সীমিত সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। সাফে খেলতে যাওয়ার আগে তাদের এক মাসের বেতন বকেয়া ছিল। বেতনের অঙ্কও খুব কম। এই বৈষম্য নিরসনের ব্যাপারে উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু নারী ফুটবল, ক্রিকেটে এই সমস্যা রয়েছে। এই বিষয় নিয়ে ইতোমধ্যে বিসিবির সাথে কথা হয়েছে। বাফুফের সাথে আলোচনা হবে। অবশ্যই এই বৈষম্য দূর করতে হবে। ক্রিকেট ও ফুটবল আইসিসি এবং ফিফার গাইডলাইন অনুসরণ করেই আমরা নারীদের অধিকার রক্ষায় বিসিবি ও বাফুফের সঙ্গে কাজ করব।’
নারীদের সঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টার এটাই প্রথম বৈঠক। নারীদের পক্ষ থেকে কোনো চাওয়া ছিল কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের সব সময় একটাই চাওয়া থাকে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং ম্যাচ খেলার। আমরা বলেছি নারী ফুটবলে উন্নয়নে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় পাশে থাকবে। তাদের চাহিদা ও অভাব পূরণে কাজ করবে।’
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা সাংবাদিকদের ব্রিফ করে বেরিয়ে যাওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নব নির্বাচিত সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমরুল হাসান। তিনি বিগত কমিটির ফিন্যান্স চেয়ারম্যানও ছিলেন। মেয়েদের বেতন বকেয়া নিয়ে তার বক্তব্য, ‘গত বছর থেকে মেয়েরা বেতন কাঠামোতে এসেছে। এই বেতনটি অনিয়মত রয়েছে। আমরা দ্রুতই বকেয়া বেতন পরিশোধ করব এবং সামনে আর কোনো বেতন বকেয়া পড়বে সেভাবে কাজ করব। বিগত সময়েও বেতন বকেয়া পড়াটা দুঃখজনক।’
ইমরুল হাসান বসুন্ধরা গ্রুপের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। ২০২২ সাল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বসুন্ধরা গ্রুপ নারীদের আর্থিক পুরস্কার প্রদান করেছিল। এবার সেই রকম কোনো ঘোষণা আছে কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘এই বিষয়ে আমাদের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জানানো হবে।’ আগের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভূইয়া মানিক ৫০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন নারীদের। এবার এখন পর্যন্ত বাফুফের কোনো কর্মকর্তা এমন ঘোষণা দেননি।