মাসুদ রানা সরকার, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি : মাত্র আর কয়েকদিন পরেই শুরু হতে চলেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব “শারদীয় দুর্গাপূজা”। উৎসবমুখর পরিবেশ ও শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দুর্গা প্রতিমাগুলোকে সুন্দর করতে চলছে কারু শিল্পীদের কাজ। শিল্পীদের নিপূণ হাতের ছোঁয়ায় ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে প্রতিমাগুলো। সেইসাথে সৌন্দর্যবর্ধনে মন্দিরগুলোতে চলছে আলোকসজ্জাসহ নানা আয়োজন।প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, এবার সারাদেশে ৩০ হাজারেরও বেশি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয়া দুর্গাপূজা। যা গত বছরের তুলনায় কম। গত বছর ৩৩ হাজার মন্ডপে পুজা উদযাপিত হয়েছিল। এর মধ্যে জেলা পূজা উদযাপন কমিটির তথ্য অনুযায়ী বগুড়ায় পূজার আয়োজন করা হয়েছে ৬২৮টি মন্ডপে।বগুড়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে বগুড়ার মন্ডপগুলো। থাকবে সেনা টহল ও নজরদারি। এ ছাড়া সাধারণ মন্ডপগুলোতে পুলিশ টহল দিবে। সেইসাথে দায়িত্ব পালন করবে পর্যাপ্ত আনসার সদস্যগণ। টহল দিবে র্যাব সদস্যরাও।বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী জেলার ১২টি উপজেলায় ৬২৮ টি মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এরমধ্যে সদরে ১১৭টি, শিবগঞ্জে ৫৩টি, আদমদিঘীতে ৬৩টি, দুপচাঁচিয়ায় ৪০টি, কাহালুতে ২৭টি, নন্দীগ্রামে ৪৫টি, শাজাহানপুরে ৪৮টি, গাবতলীতে ৬৩টি, সোনাতলায় ৩৫টি, শেরপুরে ৮৬টি, ধুনটে ২৮টি ও সারিয়াকান্দিতে ২৩টি মন্ডপে দুর্গার্পজা অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, গত বছর বগুড়ায় ৬৯৩টি মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছিল।বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু রায় বলেন, বগুড়া পূজা উদযাপনের জন্য সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন পূজা মন্ডপগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। পূজা মন্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনীও কাজ করছে। তিনি বলেন, মন্ডপগুলোতে সিসিটিভি লাগানোর জন্য বলা হয়েছে।নিরাপত্তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন নন। তিনি বলেন, পঞ্জিকা মতে আগামি ২ অক্টোবর মহালয়ার মাধ্যমে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। আর মূল পূজা শুরু হবে ৯ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে। এ ছাড়া ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমী। এবার দেবীর আগমণ দোলায় (পালকি) এবং গমন হবে গজে (হাতি)।কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের নির্বাহী কমিটির সদস্য দিলীপ কুমার দেব বলেন, এবার বগুড়ায় ৬২৮টিসহ সারাদেশে ৩০ হাজারের মত মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে এটা প্রাথমিক তথ্য। পূজার দিন ঘনিয়ে আসতে আসতে পূজা মন্ডপের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তিনি বলেন এবার সারাদেশে পুজার আয়োজন কম দেখা যাচ্ছে। বন্যা ও আর্থিক অনটনের কারনে দরিদ্র অঞ্চলে পূজার আয়োজন কম বলে জানা গেছে।বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, বগুড়ায় পূজা মন্ডপগুলোতে থাকবে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কেউ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। বিপুল সংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও আনসার বাহিনীর সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন।