ঢাকা: অবকাঠামগত উন্নয়ন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েকটি ইউনিয়নকে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনভুক্ত করার উদ্যেগ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে ৭টি ইউনিয়ন সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আসছে।
সীমানা জরিপের কাজ শেষ হলেই জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে নামগুলো পাঠানো হবে সিটি কর্পোরেশনে। সেই চিঠি যাবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে। পরে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ঘোষণা করা হবে ইউনিয়নগুলোর নাম।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী হারুন মো. বেলাল বলেন, কয়েকটি ইউনিয়ন সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আসছে। তবে নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ডিসি অফিস থেকে সীমানা জরিপ শেষে আমাদের কাছে নাম এলে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেবো। তারপর ঘোষণা করা হবে ইউনিয়নগুলোর নাম।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী বিএম এনামুল হক বলেন, বেশকিছু ইউনিয়ন সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আসছে।
যেসব ইউনিয়ন সিটি কর্পোরেশনভুক্ত হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে- পূর্ব ভাটারা, বাড্ডা, উত্তরখান, দক্ষিণখান। এছাড়া কেরানীগঞ্জ, সুলতানগঞ্জ, ডেমরা ইউনিয়নকেও সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আনার প্রস্তাব পাওয়া গেছে। এর বাইরে মাতুয়াইল এবং শ্যামপুর ইউনিয়নও ঢাকা সিটি কপোরেশন দক্ষিণের অধীনে আনার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ বলেন, কয়েকটি ইউনিয়ন ঢাকার মধ্যে থেকেও সিটি কর্পোরেশনের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলো। দীর্ঘ দিনের দাবি ছিলো যেনো এগুলো সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আনা হয়।
তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদকে সিটি কর্পোরেশনে আনার অন্যতম শর্ত হচ্ছে, দুই-তৃতীয়াংশ লোকের পেশা অকৃষি হতে হবে। সেই শর্ত অনেক আগেই পূরণ করেছে ভাটারাসহ কয়েকটি ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নে এখন কৃষি পেশার লোক পাওয়াই দুরূহ।
তিনি আরো বলেন, ইউনিয়নগুলো সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আনা হলে একটি সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেটি হলো ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কি হবে। তাদের কি সরকার আত্মীকরণ করবে? এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে।
বুধবার (০৭ অক্টোবর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও ৭টি ইউনিয়নকে সিটি কর্পোরেশনের আনার সুপারিশ করা হয়।
সংসদীয় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে অতিসত্ত্বর এসব ইউনিয়নকে সিটি কর্পোরেশনভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
ইউনিয়ন পরিষদ আইন অনুযায়ী, ‘সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন ইউনিয়ন পরিষদ বা ইহার অংশ বিশেষ পৌরসভায় বা সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরিত বা কোন বিদ্যমান পৌরসভায় বা সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবে।’
আইনে বলা আছে, ‘ইউনিয়ন বা ইহার অংশ বিশেষকে পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশন সংক্রান্ত প্রচলিত আইনে বর্ণিত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে।’
আইনে আরো বলা আছে, ‘পৌর এলাকা বা সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ওই এলাকার সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি অনুর্ধ্ব ৩০ দিনের মধ্যে ঘোষণার বিরুদ্ধে সরকারের নিকট লিখিত আপত্তি উত্থাপন করিতে পারিবেন। উত্থাপিত আপত্তি সম্পর্কে সরকার পরবর্তী ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে পৌর এলাকা বা সিটি কর্পোরেশন গঠনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।’