ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে গণপিটুনিতে হত্যার শিকার মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তার মা-বাবা আর ভাইয়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। জানাজা শেষে তোফাজ্জলকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে পাথরঘাটার কাঠালতলী ইউনিয়নের চরদোয়ানি তালিমুল কুরআন মাদরাসা ময়দানে তোফাজ্জলের জানাজা শেষ হয়। এরপর তার দাফন শেষে চরদোয়ানি বাজারের প্রধান সড়কে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত হন মানসিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জল। পরে সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে তোফাজ্জলের মরদেহ পাথরঘাটার নিজ গ্রাম চরদোয়ানিতে নেওয়া হয়। এরপর তাকে দেখতে এলাকাবাসী ভিড় জামাতে শুরু করেন।
পরে শুক্রবার সকালে তোফাজ্জলের জানাজায় অংশ নেন দূরদূরান্ত থেকে আসা ও এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় তাদের চোখে-মুখে ক্ষোভ আর ঘৃণার ছাপ দেখা যায়। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীদের এমন নিষ্ঠুর আচরণে হতবাক হয়েছেন তোফাজ্জলের গ্রামের হাজার হাজার বাসিন্দা। তার জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হওয়ার পরপরই হত্যায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। এ সময় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মো. নাজমুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, তোফাজ্জল আমাদের এলাকার বড় ভাই। তাকে যেভাবে পিটিয়ে মারা হয়েছে এটা মেনে নেওয়া যায় না। তিনি কোনো সন্ত্রাসী বা বড় ধরনের কোনো অপরাধী ছিলেন না। তাহলে তাকে কেনো এভাবে পিটিয়ে মারা হলো? আমরা এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে তোফাজ্জল ভাইয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
তোফাজ্জলের চাচাতো ভাই মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, আমার ভাইকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। তিনি কোনো চোর ছিলেন না। এমনকি এলাকায় তার নামে কারো কোনো অভিযোগও নেই। আমার ভাইয়ের হত্যায় জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার চাই।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জলকে আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে কয়েক দফায় তাকে মারধর করা হয়। পরে পুলিশের মাধ্যমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তোফাজ্জলকে মৃত ঘোষণা করেন।