ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিবৃতি দেওয়া পছন্দ করছে না অন্তর্বর্তী সরকার। তার কারণ হিসেবে সরকার মনে করছে, এটি দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হবে না।
বুধবার (১৪ আগস্ট) ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাতে এলে বিষয়টি তাকে জানানো হয়।
পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ভারতে বসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি দিলে সেটা সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হবে না। এটা আমি তাকে (ভারতীয় হাইকমিশনারকে) বলেছি। সরকারের অবস্থান এটাই।
উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, এটার জবাব তিনি (হাইকমিশনার) কীভাবে দেবেন? তিনি তো ডিসাইড করতে পারবেন না। তিনি এ নিয়ে কিছু বলতে পারেন না বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রদূতের পক্ষে এর উত্তর দেওয়া সম্ভব না। এটা সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তিনি যেটা পারেন, তার সদর দপ্তরে জানাবেন। আমি নিশ্চিত তিনি এটা সদর দপ্তরে জানাবেন।
ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষাপট নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, যে বিবৃতি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এসেছে, সেটা আসলে আমাদের জন্য স্বস্তিকর না। আমরা চাই, তিনি ভারতে বসে যেন এটা না করেন। এটাকে আমি হোস্টাইল (শত্রুতাবশত) অ্যাক্ট হিসেবে বলছি না। এটা তো আসলে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অন্তরায়। এটাই আমাদের কথা।
সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর একটি বিবিৃতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট প্রকাশ করেছে। সেই বিবৃতিতে শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিদেশি শক্তিগুলোর হাত রয়েছে। যদিও শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, ওই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিকে ভুয়া আখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, তার মা এমন কোনো বক্তব্য দেননি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। তাকে ফেরত আনা প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, মামলা হলে যদি তারা (আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) বলে, ফেরত আনতে হবে, আমরা ফেরত আনব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ ব্যাপারে কিছু করার নাই। এটা দুটি মন্ত্রণালয়ের কাজ, স্বরাষ্ট্র এবং আইন। তারা যে নির্দশনা দেবে আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব।
সংখ্যালঘুদের ওপরে হামলার ঘটনায় ভারতীয় গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন করার বিষয়টি দেশটির দূতকে স্মরণ করিয়ে দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এখানে কিছু ঘটনা ঘটেছে সেটা আমরাও তদন্ত করছি। কারও ওপর হামলা এ সরকার বরদাশত করবে না। যেগুলো হয়েছে, প্রত্যেকটি তদন্ত করে যাদের দোষী পাওয়া যাবে, বিচারের আওতায় আনা হবে। এটুকু আমি ভারতীয় হাইকমিশনারকে বলেছি। তাকে বলেছি, ভারতীয় গণমাধ্যম এটাকে অতিরজ্ঞিত করছে। এটা তাদের করা উচিত নয়।