রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে বসেছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেল চারটায় বিএনপিকে দিয়ে এই আলোচনার পর্ব শুরু করেছেন প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তার সরকারি বাসভবন যমুনায় এই বৈঠকে অংশ নিতে প্রবেশ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাউদ্দিন আহমেদ, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান।
বিকেল সাড়ে ৪টার পর জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে দলটির নেতৃবৃন্দ যুমনায় প্রবেশ করেন। সেখানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বৈঠক শুরু
বিএনপি-জামায়াতের পর এবি পার্টি, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, গণঅধিকার পরিষদ (একাংশ) এবং সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর সাড়ে সাতটায় সিপিবি ও বাসদের সঙ্গে বসবেন তিনি।
বিএনপি নেতারা জানান, দলের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানানো হবে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা, দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি নিয়ে এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দলের মতামত তুলে ধরবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, বিএনপি নতুন সরকারকে অন্তত এক বছর সময় দিতে চায়। ইতোমধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করলেও আসলে এক বছর সময় মেনে নেবে বিএনপি।
ড. ইউনূসের সরকারি বাসভবনে বিএনপি নেতারা
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যমুনায় প্রবেশের সময় সেলিমা রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, এসেছি। এখানে অনেক বিষয়ে আলোচনা হবে। আমাদের কাছে কোনও পরামর্শ চাইলে তো দেব। আসলে এটা একটা সৌজন্য সাক্ষাৎ।’
বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘আমরা ছাত্রজনতার বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ চাই। তারা যে আহ্বানে এই পরিবর্তন এনেছে, সেই বৈষম্যের অবসান চাই। গত ১৫ বছরে দেশে যে ফ্যাসিবাদী শাসন চলেছে, তা যেন ফিরে না আসে সে ব্যবস্থা করতে হবে।’
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা সাইফুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে আমার সৌজন্যমূলক কথা বলব। নতুন সরকার চাইলে পরামর্শ দেব।’
ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারে কে কোন মন্ত্রণালয় পেলেন?
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির মধ্যে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা শুরু হয়। সেদিন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ ১৩ জন উপদেষ্টা শপথ নিয়েছিলেন।
তারপর গত রোববার আরও দুই উপদেষ্টা শপথ নেন। ১৬ উপদেষ্টার মধ্যে ফারুক-ই-আজম যুক্তরাষ্ট্রে থাকার কারণে শপথ নিতে পারেননি। তিনি গতকাল রোববার রাতে দেশে পৌঁছেছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার তার শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে।