আনন্দ মিছিলে যোগ দেওয়াই কাল হলো রায়হানের, মর্গে মিলল মরদেহ

Slider চট্টগ্রাম

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ায় আনন্দ উল্লাসে নামেন রাজধানী বাড্ডার অনেকে। শিক্ষার্থীরাও অনেকে যোগ দেন সেই বিজয় মিছিলে। এমন সময় হঠাৎ মাথায় ও পিঠে গুলি এসে লাগে এক কিশোরের। ঢলে পড়ে যায় মাটিতে। সেই কিশোরের নাম মো. রায়হান। আনন্দ মিছিলে যোগ দেওয়াই কাল হলো তার জন্য।

সোমবার (৫ আগস্ট) বাড্ডায় এ ঘটনা ঘটে। এরপর দিন মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

রায়হান নোয়াখালীর সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পূর্ব দুর্গানগর গ্রামের আমজাদ হাজী বাড়ির মো. মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, রায়হান এ বছর গুলশান কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তার বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন বাড্ডায় একটা বাড়িতে কেয়ারটেকারের চাকরি করতেন। রায়হান পাশেই একটা মেসে থাকতেন। আর তার মা থাকেন নোয়াখালীতে এক ভাই এক বোনের মধ্যে রায়হান সবার বড়।

রায়হানের চাচা মো. তোফাজ্জল হোসেন রাসেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ভাতিজা মেস থেকে নামাজ পড়ে বের হয়ে দেখে শিক্ষার্থীরা আনন্দ মিছিল করছে। সে মিছিলে যোগ দেয়। তারপর মিছিলটি বাড্ডা থানার সামনে গেলে পুলিশ অতর্কিতভাবে গুলি চালায়। একটা গুলি রায়হানের পিঠে লাগে এবং সে মাটিতে লুটে পড়ে। আরেকটা গুলি তার মাথায় লাগে। শিক্ষার্থীরা তাকে একটা ভ্যানে করে হাসপাতালে পাঠায়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করানো হয়।

রায়হানের বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গোলাগুলির খবর পেয়ে আমার ছেলেকে ফোন দেই। তার ফোন এক ছেলে ধরে বলে আংকেল রায়হানকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমি হাসপাতালে হাসপাতালে পাগলের মতো খুঁজি। তারপর শেষে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে মরদেহ পাই। আমার ছেলেটার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া হলো না। আনন্দ মিছিলে যোগ দেওয়া তার কাল হয়েছে।

একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে শোকে মূর্ছা যাচ্ছেন মা আমেনা খাতুন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বুকের সন্তান আমাকে রেখে চলে গেছে। কত স্বপ্ন নিয়ে তারে ঢাকায় পড়ালেখা করাইসি। আমার ছেলে আমাকে মা বলে ডাক দেবে না। আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে। আল্লাহ আমাকে নিতো তাও আমার ছেলেকে যদি ফিরিয়ে দিতো। আমার সব শেষ হয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *