মা-বাবার সঙ্গে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা শিশু আহাদের চোখে লাগে গুলি

Slider নারী ও শিশু


মাহমুদুর রহমান(তুরান),ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ মা-বাবার সঙ্গে ৮তলা বিল্ডিংয়ের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল শিশুপুত্র আহাদ (৪)। বাসার নিচে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গুলাগুলি দেখছিল সবাই। হঠাৎ মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে শিশুপুত্র আহাদ। ছেলেকে ধরে তুলতে গিয়ে রক্তে ভিজে যায় বাবা আবুল হাসান ও মা সুমি আক্তার। ছেলেটির ডান চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাথার ভেতরে আঁটকে যায়। গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

মর্মান্তিক ঘটনাটি গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) বিকেলে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

নিহত শিশু আহাদের চাচা মোকলেসুর রহমান বলেন, আমার ভাই আবুল হাসান রায়েরবাগ এলাকায় ১১তলা বিল্ডিংয়ের আটতলায় তার স্ত্রী সুমি আক্তার, বড় ছেলে দিহান মাতুব্বর (১১) ও ছোট ছেলে আহাদকে নিয়ে বসবাস করতেন। আমার ভাই সে ঢাকা আয়কর বিভাগে চাকরি করেন। গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদাহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া গ্রামে।

তিনি বলেন, গত শুক্রবার বিকেলে আমার ভাই, ভাবি ও ভাতিজা বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাসার নিচে ছাত্র ও পুলিশের গন্ডগোল দেখছিল। হঠাৎ ভাতিজা আহাদের ডান চোখে গুলি লাগে। রক্তাক্ত আহাদকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে আইসিইউ লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। পরের দিন শনিবার রাতে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ভাতিজা আহাদ। পরদিন রবিবার বিকেলে ময়নাতদন্তের পর আহাদের মরদেহটি পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে। পরে সন্ধ্যায় অ্যাম্বুলেন্সযোগে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার পুখুরিয়ায় নিয়ে আসা হয়। রাতেই বাড়িতে দাফন করা হয় আহাদকে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এলাকার এক ব্যাক্তি জানান, ‘প্রথমে আহাদের লাশ ভাঙ্গায় আনতে দিবে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শেষ পর্যন্ত শিশুটির বাবা সরকারি চাকরি করে বিধায় সেই হিসেবে বড় বড় স্যারদের বলে সন্তানের লাশ গ্রামের বাড়ি আনতে দিয়েছে। তারপরও গ্রামের লোকজনকে তেমন না জানিয়ে শিশু আহাদকে বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। তবে বাড়িতে আগে কোনো পারিবারিক কবরস্থান ছিল না। আহাদকে দাফনের মধ্য দিয়েই বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানটির যাত্রা শুরু হলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *