জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাত ১টা ৫০ মিনিটে এ হামলা হয়। এতে বহিরাগতসহ ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ভবনে আশ্রয় নেন। হামলায় চার সাংবাদিকসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
আহত সাংবাদিকরা হলেন, বণিক বার্তার মেহেদী মামুন, দৈনিক বাংলার আব্দুর রহমান খান সার্জিল, একুশে টিভি অনলাইনের জোবায়ের আহমেদ ও দৈনিক জনকণ্ঠের ওয়াজহাতুল ইসলাম ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, হামলাকারী ব্যক্তিদের অধিকাংশের মাথায় হেলমেট ও হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। এ সময় দুটি পেট্রোল বোমা ছুঁড়তে দেখা যায় তাদের। হামলা থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আশ্রয় নেন। এ সময় তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়েন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান তারা।
পরে হল থেকে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী বের হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যান। তবে, পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পুলিশের ছোড়া গুলিতে চারজন সাংবাদিকসহ ছয় শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, উপাচার্যের উপস্থিতিতেই ছাত্রলীগ তাদের ওপর হামলা চালায় এবং পুলিশ গুলি ছোড়ে।
এর আগে, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে আসলে অতর্কিত হামলা করে ছাত্রলীগ।
এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক এবং নারী শিক্ষার্থীসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে জড়ো হতে থাকেন। এরপর একটি মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে আন্দোলনরত তারা।
রাত ৪টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ করছেন। ক্যাম্পাসে জলকামানসহ পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে।