গাজীপুরে দুই মহাসড়কে থেমে থেমে চলছে যানবাহন

Slider গ্রাম বাংলা

ঈদযাত্রার প্রথম দিন উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত ঢাকা-টঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের চন্দ্রায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বিকেলের দিকে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কয়েকটি মোড়ে যানজটের তৈরি হয়েছে। যানজট নিরসনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি ড্রোন ব্যবহার করছে পুলিশ।

দেশের গুরুত্বপূর্ণ দুটি মহাসড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক গাজীপুর জেলার ওপর দিয়ে গেছে। শিল্পাঞ্চল হওয়াতে এ জেলা থেকে কয়েক লাখ মানুষ ঈদযাত্রায় শামিল হয়। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বরাবরের মতোই মহাসড়ক দুটিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ঈদযাত্রার প্রথম দিনে সকালে সড়ক ও মহাসড়ক ছিল অনেকটা ফাঁকা। গাজীপুর, আশুলিয়া ও সাভারের আশপাশের কয়েকটি কারখানায় আংশিক ছুটি হওয়ায় দুপুরের পর থেকে মহাসড়কে যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার কিছু সময় আগে চন্দ্রার আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের চাপ দেখা যায়। মহাসড়কের কয়েক লেন দখল করে যাত্রী তুলতে দেখা গেছে বাসগুলোকে। এতেই দীর্ঘ যানবাহনের চাপ তৈরি হয়েছে।

রাজধানীর গাবতলী থেকে যাত্রী নিয়ে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন বাসচালক রাশিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে বের হওয়ার পরপরই আমিন বাজার পর্যন্ত যানবাহনের প্রচুর চাপ রয়েছে। এরপর সাভার, নবীনগর, বাইপাইল, শ্রীপুর, কবিরপুরসহ মহাসড়কটির প্রতিটি মোড়ে মোড়ে যানবাহনের ধীরগতি রয়েছে।

তিনি বলেন, ধীরগতি বলতে মহাসড়ক থেকে বাসে যাত্রী উঠানোর কারণে দাঁড়ানো, মহাসড়ক পারাপারের সময় বাস দাঁড়িয়ে থাকছে।

একই চিত্র দেখা গেছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে রয়েছে যানবাহনের জট। তবে সেই জট বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। মহাসড়কের সালনা, রাজেন্দ্রপুর, হোতাপাড়া, ভবানীপুর, বাঘেরবাজার, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি, মাওনা চৌরাস্তা পাড় হয়েই পল্লী বিদ্যুৎ মোড়, এমসি বাজার, নয়নপুর ও জৈনাবাজার এলাকার মোড়গুলোতে যানবাহনের চাপ রয়েছে। যাত্রী উঠানামা করানোর ফলে অল্প সময়ের জন্য জটের তৈরি হচ্ছে, কিছু সময়ের মধ্যে সেই জট স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে।

ময়মনসিংহগামী আল আমিন পরিবহনের চালক লিটন মিয়া বলেন, এ দীর্ঘ মহাসড়কে কোথাও কোনো নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল বা বাসস্ট্যান্ড নেই। মহাসড়কের ওপর বাস দাঁড় করিয়েই যাত্রী তোলা হচ্ছে। এতেই প্রতিটি মোড়ে মোড়ে অল্প সময়ের জন্য জটের তৈরি হচ্ছে। কিছু সময় পর জট কাটিয়ে উঠলেও একটু পর পর একই অবস্থার তৈরি হচ্ছে।

নাওজোড় হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, যানবাহনের চাপের কারণে কিছু পয়েন্টে থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করছে। ঈদে মানুষ গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছে, এতে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে। ঈদযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বিকেলে বৃষ্টি হওয়ায় মহাসড়কের যান চলাচলে ধীরগতি তৈরি হয়েছে।

গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুস সাকিব খান বলেন, ঈদযাত্রা যানজটমুক্ত রাখতে চন্দ্রাসহ জেলায় বৃহস্পতিবার সাড়ে সাতশ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে কাজ কাজ করছেন।

এদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের চন্দ্রায় যানজট নিরসনে বৃহস্পতিবার দুপুরে ড্রোন পরিচালনা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন খান ড্রোন উড্ডয়ন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন, সড়ক ও মহাসড়কে যানজট নিরসনে প্রযুক্তির ব্যবহার অনেকটাই উপকারে আসছে বলেই ড্রোন ব্যবহার এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে বলে আশা করছি।

শাহাবুদ্দিন খান বলেন, যানজট নিরসনে ধাপে ধাপে পোশাক কারখানা ছুটির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পোশাক কারখানা ছুটির পর ভোগান্তি এড়াতে কারখানা থেকেই যেন যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সে ব্যাপারে সমন্বয় করা হয়েছে। এতে পোশাক শ্রমিকদের দুর্ভোগ কমানো সম্ভব হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *